বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন

সর্বশেষ :
শাকিবকে জড়িয়ে ধরে ‘ইমোশনাল’ পরীমণি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নপূরণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধঃ ড. ইউনূস শেষ মুহূর্তে ভারতীয় দলে একাধিক পরিবর্তন ফের গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আটকে দিলো যুক্তরাষ্ট্র আগামী বছর জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন এক যুগ পর বিকেলে সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া পলাশবাড়ীতে ওয়ালটন ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ ও পুরস্কার বিতরণী পলাশবাড়ীতে ২০ হাজার টাকা মূল্যে বিক্রয় নিষিদ্ধ স্যাম্পল ওষুধ জব্দ ঢাকার সড়কে অটোরিকশা চালকরা, বন্ধ যান চলাচল সশস্ত্র বাহিনী দিবসঃ শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

ব্যবসার নামে প্রতারণা, হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা

নিজেস্ব প্রতিবেদক : প্রতারক চক্রের সদস্যরা পাওনাদারদের টাকা না দিয়ে অপপ্রচার করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা নেই । অনুসন্ধানে উঠে আসে প্রতারক চক্রের প্রতারনার  তথ্য  ।

প্রতারক চক্রের মুল হোতা , সাহারা মিডিয়া লিমিটেডে কোম্পানির :  ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জসিম উদ্দিন  (৪৭) ও তার সহযোগী: ডিরেক্টর, মঞ্জুর হাসান  (৪২) ও আব্দুস সাত্তার প্রবাসী ।

প্রতিনিধি নিয়োগ, বেকার যুবকদের চাকরি দেওয়ার কথা বলে ও সারাদেশে শত শত মানুষকে কনজুমার ডিলারশিপ, ইনভেস্টর, ডিরেক্টরশিপ, চেয়ারম্যান দেওয়ার নাম করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তাদের সহযোগী একজন নামধারী সংবাদকর্মী  ব্লাকমেইলার , যিনি প্রশাসন ও RAB এর টপ লিস্টেট আসামী।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মাজেদ ইবনে আজাদ বলেন, এই চক্র প্রথমে আমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে সকল কাগজপত্র, ছবি ও NID কার্ড এর কপি নেয়। এরপর ডিলারশিপ, ইনভেস্টর, ডিরেক্টরশিপ ইত্যাদি কথা বলে ধাপে ধাপে প্রলুব্ধ করে এমনকি ধর্মীয় বাণী, কোরআন হাদিস বিভিন্ন ধর্মীয় কথা ও পিতা মাতার বাণী ইমোশনাল শব্দচয়নে বিভিন্ন কথাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বাস সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের সাথে DBBL একাউন্ট ও নগদ হাতে হাতে লেনদেন করায় এবং তারা ধর্মীয় ভাবে বিশ্বাস চুক্তি শপথ করায়। তাদের তালবাহানা দেখে পাওনা অর্থ ও কাগজপত্র চুক্তির কথা বললে একাধিকবার টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়ে টাকা না দিয়ে মঞ্জুর হাসান আমাকে হোটসআপে ফোন দিয়ে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা নেই। টাকা না দেওয়ার জন্যে নানান রকম অজুহাত দেখায়।

টাকা দেওয়ার কথা বলে আমাকে তাদের অফিসে ডেকে নিয়ে জসিম ও মঞ্জুর হাসান অজ্ঞাত কিছু লোক সহ আমাকে রগ কেটে ফেলা ও অস্ত্র দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এবং আমাকে মিথ্যা মামলা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করবে বলে হুমকি দিয়েছে।

আমি আইনানুগ ভাবে উকিল নোটিশ পাঠানোর পর থেকে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে ব্লাকমেইল চেষ্টা ও কয়েক ধাপে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। জসিম ও মঞ্জুর হাসান তাদের ফেইসবুক স্যোশাল মিডিয়সহ অন্যান্য ফেইক আইডি দিয়ে আমার NID Card সহ আমার ছবি ব্যবহার করে উল্টো আমার সম্পর্কে মিথ্যাচার প্রচার ও খুব বাজে বাজে মন্তব্য প্রকাশ করে। যা হাজার হাজার মানুষের চোখে দৃশ্যমান ও সম্মানহানি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, তার জীবনের নিরাপত্তা ও সামাজিক সম্মান রক্ষার্থে ঘটনা উল্লেখ করে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাধারন ডাইরী করেছেন।

এই বিষয়ে আরো একজন প্রবাস ফেরত ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, এই প্রতারক চক্র জসিম উদ্দিন ও মঞ্জুর হাসান আমাকে ডিলারশিপ দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে কোন প্রকার মাল না দিয়ে নানান রকম অজুহাত দেখিয়ে চলছে। তাই আমি টাকা পাওয়ার জন্যে বাধ্য হয়ে উকিল নোটিশ পাঠাই। এতে তারা টাকা না দিয়ে সবরকম যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় আমার সাথে।

শুধু তাই নয় সংবাদ কর্মীদের সাথেও প্রতারণা করেছে এই প্রতারক চক্র। নোয়াখালীর সাংবাদিক শহিদ বলেন, আমার সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করে আমাকে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়। গান রেকর্ডের কথা বলে  অফিসে নিয়ে  প্রস্তাবের মাধ্যমে টাকা নিয়ে ডিলারশিপ নিয়োগ দেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে মাল দিবে বলে গোডাউন ভাড়া এবং এস আর জনবল নিতে বলে। বিলম্বতায় দীর্ঘ চার মাস পর কিছুদিন মাল দিয়ে বন্ধ করে দেয়।

একসঙ্গে অনেক লাখ টাকার মাল দেওয়ার আশ্বাসে সুদের উপর টাকা ও ব্যাংক লোন নিতে বলে। তারা সম্পূর্ণ টাকা নিয়ে নেয়। এমনকি আমার জমানো টাকা ও বাবার মৃত্যুর আগের সঞ্চিত বেতনের টাকা ব্যবসার জন্যে তাদের দিয়ে দেই। জসিম ও মঞ্জুর হাসান মাল না দিয়ে দীর্ঘ এক বছর চার মাস গোডাউন ভাড়া দিতে বাধ্য করে। যার কারনে আমি ঋণগ্রস্থ ও মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ি। টাকার জন্য চাপ দিলে নানান রকম তালবাহানা দেখায়। অবশেষে তাদের প্রতারণার বিরুদ্ধে লেখালেখি করলে আমাকে তাদের নিয়োগপত্র থেকে বাতিল করে আমার নামে উল্টো বাজে মন্তব্য ও সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার করে। তাদের প্রতারণা ফাঁস হবে বলে আব্দুস সাত্তার ও মঞ্জুর হাসানের বউ সানজিদা ফোনে যোগাযোগ করে এক মাসের মধ্যে সমাধান করবে বলে অঙ্গিকার করে।

পরবর্তীতে আমাকে টাকা না দিয়ে মঞ্জুর হাসান হোয়াটসঅ্যাপ কলে অফিসে এসে টাকা নিতে বলে। অফিসে আসলে টাকা না দিয়ে নানান রকম ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমি তাদের কাছে ব্যাংক লোন পরিষদের জন্যে টাকা চেয়েও পাই নি। অবশেষে ব্যাংক লোণ ও সুদের টাকা পরিষদের জন্যে বাবার শেষ সম্বল জমি বিক্রি করতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

এছাড়াও আরও একজন ভুক্তভোগী ইমাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমাকে ডিলার দেওয়ার নামে আমার থেকে টাকা নিয়ে কোন প্রকার মাল দেয় নি, তিনি কান্নাস্বরে বলেন আমি এই প্রতারক চক্রের কাছে থেকে টাকা পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছি। আল্লাহ এই প্রতারক চক্রের বিচার করুক।

এই বিষয়ে সাহারা মিডিয়া লিমিটেড বনশ্রী হেড অফিসে (সাহারা মিডিয়া লিমিটেড, ইনটেলিজেন্সিয়া স্কুল এন্ড কলেজ ভবন, ফ্লোর-১০, বাড়ি নং- ০৫, ব্লক- এফ মেইন রোড, বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা-১২১৯) গেলে তা বন্ধ থাকায় জসিম ও মঞ্জুর হাসানের সাথে যোগাযোগ ও সন্ধান মিলেনি। তবে বাড়ির মালিক বলেন তাদের কাছে অনেক মানুষ টাকা পাবে বলে পাওনাদারা এসে আমাকে জানান।

অন্যান্য ডিরেক্টরদের সাথে যোগাযোগ করলে আব্দুল বাসেদ ওরফে বাছেদ মিয়া জানান মাজেদ ইবনে আজাদ, শহিদ, মনির, ইমাম, হাজী সহ অনেকেই টাকা পাবে। আমি নিজেই একজন ভুক্তভোগী এই প্রতারক চক্র দ্বারা। আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে জসিম, মঞ্জুর হাসান ও আব্দুস সাত্তারের উৎসাহে আমি প্রবাস থাকাকালীন সময়ে আমি এবং আমার শুভাকাঙ্খীরা লক্ষ লক্ষ টাকা দেই। পরবর্তীতে দেশে এসে জানতে পারি আমার অজান্তে তারা সারা বাংলাদেশ এবং প্রবাসিদের কাছ থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবসার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এবং তিনি কোম্পানির টাকার হিসাব চাইলে তাকে হিসাব না দিয়ে মহিলা দিয়ে ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করে বলে জানান তিনি।

ডিরেক্টর কিবরিয়ার মুঠোফোন কল রেক্ড থেকে জানা যায়, সাহারা মিডিয়া লিমিটেড কোম্পানির চাঁদপুব  ফ্যাক্টরি অবৈধ ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি জায়গা দখল করে স্থাপন করা হয়েছে । জসিম তাকে বলে আমার কথা মতো চললে টাকার অভাব হবে না।

ভুক্তভোগীরা বলেন আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই প্রতারক চক্র কে দ্রুত আইনের আওতায় এনে আমাদের পাওনা অর্থ ক্ষতিপূরণ সহ ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

চাঞ্চল্যকর তথ্য, ব্যবসার নামে এই প্রতারক চক্র ঢাকার বনশ্রীতে নাম মাত্র কোম্পানির হেড অফিস (উত্পাদন বিপণন কিছুই নেই, চাঁদপুরে প্রতারক চক্র মঞ্জুর হাসানের বাড়ীতে শুধু মাত্র একটি টিনশেড দিয়ে নামমাত্র একটি মেশিন বসিয়ে সবাইকে দেখিয়ে) বিজ্ঞাপন প্রচার করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এবং যা এখনও চলমান। প্রতারণার সুবিধার জন্য তাদের কোম্পানির নামের সাথে মিডিয়া শব্দটি ব্যবহার করেছে। মূলত তারা মিডিয়া শব্দটি ব্যবহার করে ব্লাকমেইল ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করার জন্যে। বর্তমানে তারা ফেইসবুকের অনুষ্ঠান এবং কতিপয় অনলাইন থেকে সংবাদ কাটিং করে প্রচার করে। সাহারা টেলিভিশন নামে অনলাইন পোর্টাল এর কথা বলে সবাইকে ভয় দেখায়। তাহারা সাহারা মিডিয়া লিমিটেড কোম্পানির নামে অবৈধ Sahara Television, Sahara World Views, সাহারা টেলিভিশন, সাহারা মিডিয়া লিমিটেড, STV, STV HD, Sahara News BD, Sahara Stv, Sahara Media, সাহারা টেলিভিশন সৌদি আরব, সাহারা টেলিভিশন কোরিয়া টু বগুড়া ইত্যাদি ইউটিউব চ্যানেল, পেজ, গ্রুপ খুলে সারা বাংলাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে টেলিভিশন নামে প্রচার প্রদর্শন করে যাচ্ছে।

বিভিন্ন মাধ্যমে শোনা যাচ্ছে এই প্রতারক চক্র যে কোন সময় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।

খবরটি শেয়ার করুন