শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১২ অপরাহ্ন
বিপ্লব হোসেন ফারুক: ভূমি সংস্কার নতুন আইনের বিধি-বিধান অনুযায়ী সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, কেউ জাল দলিল করলে ২ বছর এবং মালিকানার অতিরিক্ত জমি রেজিস্ট্রি করে নিলে ৫ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। কারও জমি জোরপূর্বক দখল করে নিলে জেল-জরিমানা হবে ৩ বছর এভাবে ৩০টি ধারায় পৃথকভাবে বিভিন্ন মেয়াদে জেল-জরিমানার বিধান রেখে দেশে প্রথমবারের মতো ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ আইন হচ্ছে। শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২২’ শিরোনামে নতুন এ আইনের খসড়া ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।প্রস্তাবিত আইনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৪ ও ৫ ধারায় বলা হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য যদি কেউ সরকারি কিংবা বেসরকারি জমি জাল দলিলের মাধ্যমে নিজের নামে লিখে নেন তাহলে তাকে অনধিক ২ বছর এবং কমপক্ষে ৬ মাসের জেল বা ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।
অপরদিকে ৬(১) ধারা অনুযায়ী দাতার মালিকানা ও দখল না থাকা সত্ত্বেও কেউ অতিরিক্ত জমি লিখে নিলে ২ থেকে ৫ বছরের জেল এবং তিন থেকে দশ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এ ধরনের জালিয়াতি প্রতারণামূলক বেশ কিছু অপরাধকে করা হয়েছে জামিন অযোগ্য। যদি কোনো ব্যক্তি তার জমি পূর্বে বিক্রি বা হস্তান্তর করার তথ্য গোপন করে পুনরায় কোনো ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন তাহলে ৫ বছর কারাভোগের মুখোমুখি হতে হবে। একই শাস্তি হবে যদি কেউ একজনের সঙ্গে বায়না দলিল করার পর পুনরায় অন্য কারও সঙ্গে বায়না চুক্তি করেন। এছাড়া কেউ যদি কোনো ব্যক্তিকে ভুল বুঝিয়ে বা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে প্রতারণামূলকভাবে কোনো জমির দান দলিল সৃষ্টি করেন তাহলে ২ বছরের কারাদণ্ড হবে। যদি কেউ উত্তরাধিকারীকে বঞ্চিত করে নিজের প্রাপ্যতার বাইরে বেশি জমি নিজের নামে দলিল করে নেয় তাহলে তাকেও অনধিক ২ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এছাড়া কেউ যদি বৈধ কাগজপত্র না থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তি মালিকানাধীন বা সরকারি খাস জমিসহ সরকারি যে কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার মালিকানাধীন ভূমি জোরপূর্বক দখল করে কোন স্থাপনা নির্মাণ করে তাহলে জড়িত ব্যক্তি কে ২বছর সাজা ভোগ করতে হবে,সঙ্গে থাকছে জরিমানার বিধান।
এদিকে আইনে সাক্ষীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া ৩৪ ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছু থাকুক না কেন, এ আইনের অধীন কোনো প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এই আইনে অনুমোদিত যে কোনো অর্থদণ্ড আরোপ করতে পারবেন।এই আইনের অধীন অপরাধের তদন্তভার পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে দ্রুত তদন্ত শুরু করতে হবে। দায়িত্ব নেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। (১ম পর্ব) চলবে।