অগ্নিশিখা অনলাইন
- ১৩ মে, ২০২৪ / ১৪৩ জন দেখেছে
কালিয়াকৈর প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে জমে উঠেছে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ উপজেলা চেয়ারম্যানের চেয়ার। সেই চেয়ারটি দখলে নিতে মরিয়া গুরু ও তার শিষ্য। চেয়ার পেয়ে গুরুর জনবিমুখ ও চেয়ার পেয়ে শিষ্যের জনমুখো হওয়া নিয়ে হিসেবে কষছেন জনগন। তবে জনমুখো ও কর্ম ফলের কারণে তাদের এ লড়াইয়ে জনমুখে ভাসছে শিষ্যের নাম।
এলাকাবাসী, নেতাকর্মী, উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২১ মে কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও কালিয়াকৈর পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। দ্বিতীয় ধাপের এ নির্বাচন সামনে রেখে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত। নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ উপজেলা চেয়ারম্যানের চেয়ারটি। এখানে চেয়ারম্যান পদে কাগজে-কলমে তিন প্রার্থী। তাদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী (কাপ পিরিচ) মুরাদ কবীর শেষ মুহুর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তাই এ পদে লড়ছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সিকদারের (আনারস) সঙ্গে তারই এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সহচর, বর্তমান উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও গাজীপুর জেলা যুবলীগের যুগ্মআহবায়ক সেলিম আজাদ (মোটরসাইকেল)। নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারন ভোটাররা এই দুই নেতার লড়াইকে গুরু-শিষ্যের লড়াই হিসেবে দেখছেন। তাদের ভাষ্যমতে, কামাল উদ্দিন সিকদার দুই বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু তিনি নির্বাচনের পর উন্নয়নে ভুমিকা রাখলেও ধীরে ধীরে জনবিমুখ হয়ে পড়েছেন। নির্বাচনের পর তিনি জনগনের কাছে না যাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে বলে মনে করছেন ভোটাররা। পক্ষান্তরে, তার শিষ্য সেলিম আজাদ বিপুল ভোটে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েও থেমে থাকেনি। প্রত্যেকটা গ্রাম পাড়া-মহাল্লায় জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন, এখনো যাচ্ছেন। তাদের সমস্যা ও সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়িছেন এই শিষ্য সেলিম আজাদ। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভুমিকা রেখেছেন। ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে প্রায় ৩ হাজারের বেশি ওয়াজ মাহফিলে যোগদান করেন। তার অনুদানের ছুয়া লেগেছে বিভিন্ন মসজিদ, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, মন্দিরসহ প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এমন কোনো গ্রাম, পাড়া-মহল্লা নেই যেখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী সেলিম আজাদের অনুদান যায়নি। এমন জনমুখো ও কর্ম ফলের কারণে গুরু-শিষ্যের এ লড়াইয়ে জনমুখে ভাসছে শিষ্যের নাম। তাদের ভাষ্য, যাকে আমরা কাছে পাই, তাকেই আমরা নির্বাচিত করবো। জনগন মোটরসাইকেল মার্কায় ভোট দিবে, রেখে খেতে পারলে সেলিম আজাদের ভোটের অভাব হবে না। তবে সাধারন ভোটারদের ভাষ্য, বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিকদার উন্নয়নমুলক কাজ করলেও এলাকায় যোগাযোগ কম। তবে সেলিম আজাদও উন্নয়নে ভুমিকা রেখেছেন। আবার বার বার এলাকাবাসীর কাছে গিয়েছেন, তাদের সমস্যার কথা শুনেছেন, অনুদান দিয়েছেন।
মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী সেলিম আজাদ বলেন, আনারস প্রতীকের প্রার্থী নিজে ও তার সমর্থক, নেতাকর্মীরা আমার মোটরসাইকেল সমর্থকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তাই সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত তিনি। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে অনেক ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হবেন বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে আনারস প্রতীকের প্রার্থী কামাল উদ্দিন সিকদার তার প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে গিয়ে সুষ্ঠ নির্বাচন হওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন। তবে তিনি এবাও বিজয়ের মালা গলায় পড়ার বিষয়ে আশাবাদী।
অবাধ, সুষ্ঠ, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার হাফিজুর রহমান জানান, এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেপর আসলে সকালে একদিন যাবি না নিয়ে খালি যাইবেন করছেন। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ৭৯৪ জন।