বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন
ফজলুল হক (কালিগঞ্জ) সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
প্রতিবছরের ন্যায় বনবিভাগের সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ আগামী তিন মাসের জন্য সুন্দরবনের সম্পূর্ণ প্রবেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আগামীকাল শনিবার ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসের জন্য প্রবেশ বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবনের মাছধরা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর সময়ের মধ্যে পর্যটক প্রবেশ, সাধারণ মানুষের চলাচলস নিষিদ্ধ থাকবে। সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল উপকূলীয় অঞ্চলের হাজার হাজার মাছ কাঁকড়া ধরা জেলে বাওয়ালিরা চরম দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
সুন্দরবনের নদী,খালে মাছ ও বনে জীব বৈচিত্রের প্রাণীদের বিচরণ ও প্রজনন জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জুন থেকে আগস্ট, এই তিন মাস সুন্দরবনের নদী-খালের মাছ কাঁকড়া প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এই তিন মাস সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ ছাড়া এই সময়ে বন্য প্রাণীরও প্রজনন মৌসুম। এই তিন মাস বনে পর্যটক ও জেলে না গেলে বনের জীববৈচিত্র্য ও বন্য প্রাণী নিরুপদ্রব থাকবে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের যে ক্ষতি হয়েছে, তা দ্রুত কাটিয়ে উঠবে।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ কাঁকড়া আহরণ বন্ধ থাকত। ২০২২ সালে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এ নিষেধাজ্ঞা এক মাস বৃদ্ধি করে ১ জুন থেকে করা হয়েছে। সেই থেকে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস বনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
বন বিভাগ জানায়, সুন্দরবনে প্রায় ২৮৯ প্রজাতির স্থলজ প্রাণী বাস করে। এ ছাড়া আছে প্রায় ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কাঁকড়া সহ ২১৯ প্রজাতির জলজ প্রাণী। বনের নদী ও খালে নৌযান চলাচল করলে মাছের ডিম ছাড়তে সমস্যা হবে তাই সব ধরণের নৌযানও বন্ধ থাকবে।
বনজীবীরা জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের সংকেত শুনে ঝড়ের আগেই তাঁরা সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরেছিলেন। এরপর আর বন বিভাগ থেকে বনে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
বনজীবীরা আরও জানান, সুন্দরবনে মাছ, কাঁকড়া ও মধু আহরণ করেই সংসার চলে তাদের। সুন্দরবন প্রবেশে তিন মাস পাশ পারমিট সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এক সপ্তাহ আগে ঝড়ের সংকেত শুনে বন থেকে বাড়িতে ফিরেছে তারা। ঝড়ের কারণে আগে থেকে সুন্দরবন থেকে বাড়ি ফিরতে হয়েছে তিন মাস মাছ কাঁকড়া ধরা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সুন্দরবন এ মাছ ও কাঁকড়া ধরা। পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের এই মুহূর্তে চরম মানবতা জীবন যাপন করতে হবে। ধার দেনা বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ করে কোন প্রকার নৌকা নিয়ে সুন্দরবন এ গিয়েছিলেন। কিন্তু ঝড়ের কারণে তারা লোকসানে পড়েছেন।