শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন
ধনবাড়ী(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর বানিয়াজানে ইট ভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার কারণে ভাটার আশেপাশের ৫ থেকে ৬ একর জমির সকল কাঁচা-পাঁকা সোনালী ধান পুড়ে চিটা হয়েগেছে।
এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক। ক্ষতিপূরণের দাবীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।
সরেজমিনে বানিয়াজান গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলাল উদ্দিন, আজিজুল শেখ, ভানু বেগম, বাবুল ইসলাম, হুসেন আলী, রুবেল হোসেন ও ময়নাল মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করে তারা
জানান, তিন ফসলী জমিতে সরকারীভাবে ইট ভাটা নির্মাণ অবৈধ হলেও সরকারী নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইট ভাটা নির্মাণ করে ইট তৈরী করে রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছে সাবিব ইট
ভাট কর্তৃপক্ষ। ইট ভাটার পাশের আমাদের এলাকার সকল কৃষকের পাঁকা সোনালী ধান কিছু দিন পরেই কেটে ফসল ঘরে তুলতে হবে। এই অবস্থায় ইট ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া, ছাই ও গ্যাসের
কারণে ক্ষেতের সকল ধান পুড়ে চিটা হয়ে গেছে। ফলে বড় ধরণের ক্ষতির মসুখে পড়েছি আমরা কৃষকরা। ইট ভাটার মালিক পক্ষকে বলেও কোন প্রকার সুরাহা পাওয়া যায়নি। আমরা এই কৃষকরা এখন
ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের এই ধান কেটে ফসল ঘরে তোলার মত উপায় নেই। বিঘাতে তিন চার মন ধান উৎপাদন হবে কীনা সন্দেহ ! এতে করে আমাদের ছেলে মেয়েদের পড়া-লেখা, সংসারে ব্যায় তো দূরের
কথা শ্রমিক খরচই উঠবে না। তাই আমরা ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী আফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এখন এই ঘটনায় সরকারী ভাবে আমরা ক্ষতিপূরণ চাই।
কৃষক আলাল উদ্দিন ও ময়নাল হোসেন বলেন, এই সাবিব ইট ভাটার কারণে আমাদের এলাকার নারিকেল, সুপারি, লেবু সহ সকল ধরণের ফলের গাছে ফল আসছে না। সেই সাথে গাছের পাতা পুড়ে মরে
যাচ্ছে গাছ। শিশু ও বৃদ্ধ সহ সকলেই ঠান্ডা সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মাটি আনা নেয়ার কারণে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। কয়েক মাস পূর্বে এই অবৈধ ইট ভাটায় ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান করে
মোটা অংকের জরিমা করেছে। কিন্তু কি অদৃশ্য শক্তির কারণে ভাটাটি বন্ধ হচ্ছে না! আমরা এই অবৈধ ইট ভাটা বন্ধে জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর জোর হস্তক্ষেপ
কামনা করছি।
এ ব্যাপারে সাবিব ইট ভাটায় গেলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত গা ঢাকা দেয় ভাটা কৃর্তৃপক্ষ। ভাটা ম্যানেজার রাকিবুল ইসলামের মুঠোফোনে বার বার কল করা হলে ফোনটি বন্ধ
পাওয়া যায়।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান জানান, তিন ফসলী জমিতে ইট ভাটা নির্মান সম্পূর্ন অবৈধ। বিষয়টি আমি মৌখিক ভাবে জানা মাত্রই ঐ এলাকার ব্লক
সুপারভাইজার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছিলো ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য। আমি নিজেও সরেজমিনে গিয়ে ঘটনাটি দেখব।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১২ তারিখে দুপুরে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহমেদের নেতৃত্বে সাবিব ভাটায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমা আদায় করেন।“উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এই ইট ভাষার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া
হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”