বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন

সনাতন জাগরণ মঞ্চের সমাবেশ, ৮ দাবিতে লংমার্চের ঘোষণা

মাসুদ পারভেজ,চট্রগ্রাম বিভাগীয় চীফঃ৮ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি মাঠে গণসমাবেশ করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সমাবেশ শেষে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেয়া হয়।

এ ঘোষণা দেন পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃঞ্চ দাস মহারাজ। তিনি বলেন, ‌ ‘যে মঞ্চ থেকে ৬ দফা দাবি ঘোষিত হয়েছে, সেই লালদিঘীর ময়দানে আজ হিন্দু সনাতনীদের গণজোয়ার এসেছে‌। আমাদের যত বেশি নির্যাতন করা হবে, তত বেশি আমরা এক হবো। এই ঐক্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে বাংলার কৃষ্টি কালচারের ঐক্য। দাবি আদায়ে বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ শেষে আমরা ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করবো।’

৮ দফা দাবি আদায়ের উদ্দেশ্য এরই মধ্যে ১৯ সদস্যের সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ বলেন, ‘যদি এই দেশ থেকে আমাদের উচ্ছেদ করে কেউ শান্তিতে থাকতে চান, তাহলে এটা আফগানিস্তান-সিরিয়া হবে, গণতান্ত্রিক শক্তি থাকবে না। সাম্প্রদায়িকতার অভয়ারণ্য হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেউ যদি আমাদের উৎখাত করে শান্তিতে থাকার চেষ্টা করেন, তাহলে এ ভূমি আফগানিস্তান হবে, সিরিয়া হবে। সাম্প্রদায়িক আচরণ করে বাংলাদেশের কোনো গণতান্ত্রিক শক্তি রাজনীতি করার সুযোগ পাবে না। ক্ষমতার পটপরিবর্তন হচ্ছে বারবার, এ দেশে স্থিতিশীলতা আসছে না। কারণ, সহনশীলতা লুপ্ত হচ্ছে। সম্মানবোধ হারিয়ে যাচ্ছে, শিক্ষককে পদত্যাগ করানো হচ্ছে। শুধু সংখ্যালঘু পরিচয়ে ৯৩ জনকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ভেটেরিনারি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দুদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। মাঝখানে কিছুদিন এমন অপকর্ম থেমে গিয়েছিল। এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমরা আর নীরব থাকবো না।’

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী আরও বলেন, ‘কেউ যদি রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনায় জড়িত থাকেন, তাদের আসামি করুন, বিরোধিতা করবো না। কিন্তু বেছে বেছে মামলায় আসামি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল চার মূলনীতিতে। আমাদের দলীয় পরিচয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়। হিন্দুদের অস্তিত্বের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না।’

সংখ্যানুপাতিক হারে হিন্দুদের সংসদে আসন বিন্যাস করার দাবি করে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে ভোট বর্জন করবো। গণতন্ত্রের নামে প্রহসন চাই না। ১৫ হাজার কোটি টাকা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের মাত্র ২০০ কোটি টাকা সংখ্যালঘুদের জন্য কেন?’

গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারীর সঞ্চালনায় গণসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- পটিয়া পাঁচরিয়া তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ রবীশ্বরানন্দ পুরী মহারাজ, কৈবল্যধাম আশ্রমের মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য, শংকর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ তপনানন্দ গিরি মহারাজ, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত সচিদানন্দ পুরী মহারাজ, কৈবল্যধামের মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য, স্বামী গোপীনাথ মহারাজ প্রমুখ।

আট দফা দাবি হলো
সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শান্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের যথাপোযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে। পাশাপাশি বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টিকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে।

‘দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন আইন’ যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা রুম বরাদ্দ করতে হবে। সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন করতে হবে এবং শারদীয় দুর্গাপুজায় ৫ দিন ছুটি দিতে হবে।

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com