বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ন
বিনোদন ডেস্কঃ জীবনের ৮৬ বসন্ত পেরিয়ে অনন্তলোকে পাড়ি জমালেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ষীয়ান নাট্যকার ও অভিনেতা মনোজ মিত্র। দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভোগার পর মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে কলকাতার একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধ্যক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন মনোজ। তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন তার ভাই সাহিত্যিক অমর মিত্র।
শুধু মঞ্চে নয়, চলচ্চিত্রেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন মনোজ। ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘হঠাৎ বৃষ্টি’-তে অভিনয় করে ব্যাপক পরিচিতি পান তিনি। সেই ছবিতে তার অভিনয় এখনও অনেকের কাছে স্মরণীয়।
এদিকে কলকাতার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, প্রবীণ এই নাট্যকারের হৃদযন্ত্র ঠিক মতো কাজ করছে না। তাছাড়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও ছিল না মনোজের। সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্যহীনতাও দেখা দিয়েছিল। প্রবীণ অভিনেতার চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে প্রয়াত হলেন মনোজ।
মনোজ মিত্রের জন্ম ১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলার সাতক্ষীরা জেলার ধূলিহর গ্রামে। ১৯৫৮ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজের দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতক হন তিনি। এই কলেজে পড়ার সময়েই নাটকের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন। সেই সময় তিনি সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন বাদল সরকার, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তদের। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন মনোজ। গবেষণাও শুরু করেছিলেন।
১৯৫৭ সালে নাটকে অভিনয় শুরু মনোজের। ১৯৭৯ সালে তিনি সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে বিভিন্ন কলেজে দর্শন বিষয়েও শিক্ষকতা করেছিলেন। প্রথম নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’ লেখেন ১৯৫৯ সালে। কিন্তু ১৯৭২-এ ‘চাক ভাঙা মধু’ নাটকের মাধ্যমে তার খ্যাতি এবং পরিচিতি বাড়ে। ওই নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছিলেন বিভাস চক্রবর্তী। তার প্রতিষ্ঠিত নাট্যগোষ্ঠীর নাম ‘সুন্দরম’। মাঝে ‘সুন্দরম’ ছেড়ে ‘ঋতায়ণ’ নামে এক দল গড়লেও কিছু দিনের মধ্যে ‘সুন্দরম’-এই ফিরে আসেন। ‘অবসন্ন প্রজাপতি’, ‘নীলা’, ‘মৃত্যুর চোখে জল’, ‘সিংহদ্বার’, ‘ফেরা’-র মতো একাধিক দর্শক সমাদৃত নাটকের সঙ্গে জুড়েছিল মনোজের নাম।