বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন
মোঃ হাবিবুর রহমান,কুষ্টিয়াঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া ইউনিয়নের কয়া ও রায়ডাঙা মৌজায় গড়াই নদীর ড্রেজিংকৃত বালু অপসারণের জন্য ইজারা দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। চলতি বছরের জুন মাসে প্রায় পাঁচ কোটি ১৭লাখ টাকায় বালু অপসারণের ইজারা পান কয়ার মেসার্স প্রিয়াংকা ব্রিকসের প্রোফাইটর মো. জাহিদুল হোসেন।
তিনি চুক্তিভিত্তিক প্রতিমাসে ১০লাখ টাকা রাজস্ব পরিশোধ করে বালু অপসারণ করছেন। তবে গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পরিবর্তনের পর বৈধভাবে ইজারাকৃত বালু অপসারণের বাধা প্রদান ও বালু কাটার যন্ত্র ভেকু ও পরিবহনের ট্রাক ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আব্দুল মজিদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক তুহিন শেখ, কয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক ইউনুস আলী ও সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম এবং তাদের সমর্থিত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে গত ২ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও বালু অপসারণ করতে পারছেন না ভুক্তভোগী ইজারাদার। ইজারাদার জাহিদুল হোসেন বলেন, আমি কোনো দল করি না। কোনোদিন মিটিং – মিছিলেও যায়নি। তবুও ৫ আগষ্টের পর বিএনপি নেতা আব্দুল মজিদ, তুহিন শেখ, শরিফুল ইসলাম, ইউনিস আলীসহ ১০-১৫ জন মিলে আমার প্রায় ৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার বৈধ ইজারাকৃত বালু তুলতে বাধা দিয়ে আসছে। বেশ কয়েকটি ট্রাক ও ভেকুতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে তারা। বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনকে মৌখিকভাবে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি।
এই নিয়ে সর্বশেষ ২ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, বালু অপসারণ করতে না পারলেও প্রতিমাসে চুক্তি অনুযায়ী ১০লাখ টাকা রাজস্ব পরিশোধ করে আসছি। এতে আমি চরম ক্ষতির সম্মুখে পড়েছি। বালু অপসারণ করা না গেলে প্রতিমাসে মাসে ১০লাখ টাকা রাজস্ব হারাবে সরকার। এর একটা সুষ্ঠু সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আব্দুল মজিদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক তুহিন শেখ, কয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক ইউনুস আলী ও সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম। তাদের দাবি, বালু কাটলে এলাকায় ভাঙন দেখা দিতে পারে। সেজন্য স্থানীয় গ্রামবাসী বালু কাটা বন্ধ করেছে। এই নিয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ করিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কয়া ও রায়ডাঙা এলাকায় গড়াই নদীর ড্রেজিংকৃত বালু বেশখানেকটা অপসারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় জনগণ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির সরকার বলেন, জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগের একটি অনুলিপি পেয়েছি। সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রমাণ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কুষ্টিয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশিদুর রহমান বলেন, বালু অপসারণের বাধার বিষয়টি ঠিকাদার আমাকে জানায়নি। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।