বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন
মিলন মন্ডল,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ স্বামীকে নির্যাতনের অভিযোগে স্ত্রী ও শাশুড়িসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা হয়েছে গাইবান্ধার একটি আদালতে। মামলাটি আমলে নিয়ে আসামি স্ত্রী চন্দনা রানী প্রতিমাকে (৩২) আদালতে হাজিরের জন্য সমন জারির আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধার আমলী (সুন্দরগঞ্জ) মো. জান্নাতুল ইসলামের আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন শ্রী রবিন্দ্র নাথ কর্মকার (৪২) নামের এক ব্যক্তি। নির্যাতিত রবিন্দ্র নাথ কর্মকার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের মৃত্যু যোগেশ চন্দ্র কর্মকারের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবি এ্যাডভোকেট আবেদুর রহমান সবুজ জানান, যৌতুক লোভী ও নির্যাতনকারী স্ত্রীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় অভিযোগ এনে আদালতে মামলার জন্য আবেদন করা হয়। শুনানিতে আদালত সন্তষ্ট হয়ে মামলাটি গ্রহণ করে ১নং আসামি স্ত্রী চন্দনা রানী প্রতিমাকে সমন পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
অপর দুই আসামি হলেন, বাদি রবিন্দ্র নাথ কর্মকারের শাশুড়ি উর্মিলা রানী (৫৫) ও ভায়রা ভাই দীপু চন্দ্র কণ্ঠক (৩৫)। তিনি সুন্দরগঞ্জ পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডের বামনজল গ্রামের মৃত্যু রবিন্দ্রনাথ কণ্ঠকের ছেলে।
মামলার নথির বরাত দিয়ে আইনজীবি আবেদুর রহমান সবুজ বলেন, ১৮ বছর আগে সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ি বামনজল গ্রামের সুরেশ চন্দ্রের মেয়ে চন্দনা রানী প্রতিমার সঙ্গে রবিন্দ্র নাথ কর্মকারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে পায়েল কর্মকার (১৫) ও মুসকান (৭) নামে দুই মেয়ে সন্তান আছে। বিয়ের পর থেকে চন্দনা রানী তার মা ও বোন জামাই মিলে নগদ ৩০ লাখ টাকা অথবা বাড়ী ভিটার ৩৫ শতাংশ জমি লিখে দেওয়ার দাবিতে রবিন্দ্র নাথকে নির্যাতন করে আসছে। সংসার ও সন্তানদের কথা চিন্তা করে রবিন্দ্র নাথ ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই কবলা দলিল মুলে সাড়ে ১৩ শতক জমি চন্দনা রানীর নামে ক্রয় করে দেয়।
তিনি আরও জানান, কিছুদিন ভালোভাবে সংসার চললেও আবারও বাড়ী ভিটের জায়গা অথবা ৩০ লাখ টাকা না দিলে চন্দনা রানী সংসার করিবে না মর্মে বিভিন্ন হুমকিসহ রবিন্দ্র নাথকে অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ৯ মে চন্দনা রানী তার বোন জামাই দীপু চন্দ্র কণ্ঠকের সহযোগিতায় শোকেচ খুলে নগদ ২৫ লাখ টাকা, ২২ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও ১ লাখ টাকা মুল্যের জিনিসপত্রসহ দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যায়। পরে বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেও চন্দনা রানীকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ফলে অতিষ্ট রবিন্দ্র নাথ প্রতিকার দাবিতে আদালতে মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন।
মামলার বাদী রবিন্দ্র নাথ কর্মকার অভিযোগ করে বলেন, বাড়িভিটে লিখে দেওয়া অথবা নগদ ৩০ লাখ টাকার দাবিতে প্রায়ই স্ত্রী গালাগালি করে সংসার করবেনা বলে তাকে হুমকি দেন। সংসার ও দুই নাবালক মেয়ে সন্তানের কথা ভেবে এরআগে সাড়ে ১৩ শতক জমি কিনে স্ত্রীর নামে দলিল করে দেই। কিন্তু তারপরেও সংসার করবে না আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেল খাটাবে বলে হুমকি দেয়।
আমাদের দুটি মেয়ে সন্তান আছে। মানসম্মানের ভয়ে এতোদিন চুপচাপ ছিলাম। তার অত্যাচার ও শারীরিক-মানুষিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আশা করি ন্যায় বিচার পাবো।