শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১২ অপরাহ্ন
ক্রীড়া প্রতিবেদকঃ লাল-সবুজ জার্সিতে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছেন হামজা চৌধুরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল লেস্টার সিটিতে খেলা এই মিডফিল্ডারের বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলতে আর কোনো বাধা নেই। হামজার আগমনে উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেছেন স্বয়ং বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। তিনি মনে করেন অন্যান্য প্রবাসী ফুটবলারদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে হামজা। তাকে দেখে অন্যরাও দেশের হয়ে খেলার জন্য ফিরে আসবে।
এমন খবর পাওয়ার পর সমর্থকদের মতো বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়ালও দারুণ খুশি হয়েছেন। রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হামজাকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি। এরপর শুত্রবার সকালে বাফুফে সভাপতি গুলশানের নিজ বাসায় গণমাধ্যমের সামনে হামজা ও দেশের ফুটবলের বর্তমান ও ভবিষ্যৎসহ নানা দিক নিয়ে কথা বলেন।
লেস্টার সিটির মিডফিল্ডার হামজাকে বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তি তাবিথের কাছে বেশ ইতিবাচক। তিনি মনে করেন, এর মধ্য দিয়েই প্রবাসী বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা আসার অনুপ্রেরণা পাবেন। তিনি বলেন, ‘আশা করছি, হামজা চৌধুরীর মতো অন্য প্রবাসী যারা খেলছেন, তাদের চিহ্নিত করে আমরা বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য অনুপ্রাণিত করতে পারব।
গেল দেড় বছর ধরে বাফুফের সংস্পর্শে রয়েছেন হামজা বিষয়টি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘হামজার সঙ্গে বাফুফের দেড় বছর ধরে কথা চলছে। তার সঙ্গে আমার সরাসরি কথা হয়নি। তবে সামনের দিকে সরাসরি বসব। প্রস্তুতি নিচ্ছি, এরই মধ্যে আরও দুয়েক জন খেলোয়াড় পাওয়া যায় কি না। সব প্রস্তুতি নিয়ে হামজার সঙ্গে বসার চিন্তা করছি।
হামজা ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ইংল্যান্ডে রয়েছেন। প্রিমিয়ার লিগে খেলার পাশাপাশি তিনি খেলেছেন দেশটির অনূর্ধ্ব ২১ দলের হয়েও। যেখানে তার সতীর্থ হিসেবে ছিলেন ইংল্যান্ডের তারকা ফুটবলার ফিল ফোডেনও। সেখানকার ফুটবল আর এখানকার ফুটবল আকাশ পাতাল তফাৎ। তাই এমন একজন ফুটবলার হঠাৎ এসে দেশের ফুটবলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া বেশ কঠিন হতে পারে।
তবে বাফুফে সভাপতি মনে করেন, হামজার সেই সামর্থ্য রয়েছে। তিনি বলেন, ‘পেশাদার ফুটবলারদের সামর্থ্য আছে সব জায়গায় মানিয়ে নেওয়ার। আমাদের খেলোয়াড়দেরও তা আছে। বিদেশেও যারা খেলেন তাদেরও সেই সামর্থ্য আছে। আসলে দেখার বিষয়, যেখানে খেলব সেই ভেন্যুতে, সেখানে মানিয়ে নিতে পারেন কি না। বিশেষ করে অ্যাওয়ে ম্যাচগুলোতে কীভাবে মানিয়ে নেবেন সেটি নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। কাজ করব।
এ সময় জাতীয় দলের বর্তমান দুই তারকা খেলোয়াড় জামাল ভূঁইয়া ও তারেক কাজীর উদাহরণ দিয়ে তাবিথ আরও বলেন, ‘অতীতে এসেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। ও তারিক কাজী। অন্য লিগ থেকে। তারা ধাপে ধাপে এখানে পরিচিত হয়েছেন। তাদের দেখে আমরা হামজা পর্যন্ত এসে পৌঁছেছি। এটি আমাদের অর্জন। তাকে পেয়েছি। টপ খেলোয়াড় সে। এখন তাকে কীভাবে খেলাব তা জাতীয় টিমস কমিটি দেখবে। এ ছাড়া কোচের ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।
এ দিকে আগামী মার্চে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডে খেলবে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে হামজা খেলবেন কি না, তা নিশ্চিত নয় এখনো। বাফুফে সভাপতি জানালেন, লেস্টার সিটির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবেন তারা। বলেন, ‘কোনো তথ্য আপাতত নেই। এখনো সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছি না। তবে এএফসি এশিয়ান কাপ নিয়ে আমরা প্ল্যানিং করছি। এর আগে বাংলাদেশের প্রীতি ম্যাচ ক্লোজড ডোর হবে। ভিডিও বা অন্য কিছুর জন্য বাইরের কাউকে অ্যালাউ করতে দেব না। এশিয়ান কাপের বাছাই পর্ব থেকে একটি দল যাবে গ্রুপ সেরা হয়ে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি অনেক গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। প্রথম ম্যাচ ভালো করতে পারলে গ্রুপ সেরা হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার সুযোগ থাকবে। ২৫ জানুয়ারি প্রিমিয়ার লিগ শেষ হবে। তারপর চার সপ্তাহ জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরু হবে। এরই মধ্যে কার সঙ্গে খেলব, কবে খেলব, কবে যাব ভারতে-তা আরও একটু সময় নিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।