সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ অপরাহ্ন
সাহাবউদ্দিন,নারায়নগঞ্জঃ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফ্যাসিস্ট সরকার ৫ আগষ্ট পতন ঘটে। উত্তাল আন্দোলনের মুখে পালিয়ে যায় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামীলীগের সকল নেতা। আর ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যতম সহযোগী নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবার এহেন কোন অপকর্ম নাই যা তাদের দিয়ে সংগঠিত হয় নাই। যার কারণে ওসমান পরিবারের সকলেই পালিয়ে যায় ।
ওসমান পরিবার ছাড়াও তাদের চেলা চামচারা কি করেছে তার হিসাব পুরো নারায়ণগঞ্জবাসী খুব ভালো করে টের পেয়েছে বিগত ১৫ বছরে।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ওসমান পরিবারের শুধু নাসিম ওসমান জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সময় সেলিম ওসমান কিংবা শামীম ওসমান সংসদ সদস্য না হয়েও আওয়ামীলীগের দাপটে সেলিম ওসমান দখল করে নেন নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, বিকেএমইএ, চেম্বর অব কমার্সসহ বাণিজ্যিক সংগঠনগুলো।
কোন ধরণের প্রতিবাদ প্রতিরোধ না থাকায় সেলিম ওসমান ২০১০ সালের জুলাই মাসে বিকেএমইএ এক প্রকার দখল করে রাম রাজত্ব শুরু করে। সকল ধরণের ব্যবসায়ীদের নানাভাবে জিম্মি করে সেলিম ওসমান চাঁদাবাজি-দখলসহ সকল অপকর্মের রাম রাজত্ব শুরু চারেয় অতিষ্ট করে তুলে নারায়ণগঞ্জবাসীকে। এমন রাম রাজত্বের একমাত্র অন্যতম রাজসাক্ষি মোহাম্মদ হাতেম । সেই হাতেম এখন নিজের স্বার্থ হাসিল করতে নান ছলচাতুরী চালিয়ে যাচ্ছে।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ফ্যাসিস্ট সরকার ৫ আগষ্ট পতনের সেলিম ওসমান ওসমান অজ্ঞাত স্থানে পলাতক অবস্থায় ২৫ আগষ্ট শারিরীক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের করে একটি পত্র পাঠানো হয় বিকেএমইএ এর পরিচালনা পর্ষদের বরাবার । এই পদত্যাগ পত্রে সেলিম ওসমান তার বিশাল ফিরিস্তি উল্লেখ করলেও ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের বিষয়ে কোন তথ্য উল্লেখ করেন নাই । তবে ওই পদত্যাগ পত্রের ৪ নম্বর কলামে সেলিম ওসমান লিখেছেন, “আপনারা সবাই স্বীকার করবেন যে, বর্তমান নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম দীর্ঘদিন ধরে আমাকে, বিকেএমইএ- তে ও নীট সেক্টরের উন্নতির জন্য সহায়তা করে গেছে । বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি পরিচলনা পর্ষদের সকলের কাছে অনুরোধ রাখতে চাই, আমার বিদায়ের পর পর বিকেএমইএ ও নীট সেক্টরের উন্নয়ন কল্পে মোহাম্মদ হাতেম এর অবদান এবং প্রচেষ্টায় কথা স্বরণ করে তাকে এই নতুন বিকেএমইএ পরিচালনার জন্য সভাপতির দায়িত্বভার অর্পন কার হোক। আপনাদের প্রতি এই আমার বিশেষ অনুরোধ।”
সেলিম ওসমানের উল্লেখিত এমন বক্তব্যের পরও মোহাম্মদ হাতেম ও তার অনুসারী দালাল চক্র প্রমাণ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন মোহাম্মদ হাতেম ওসমান পরিবার অর্থাৎ ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোষর ছিলেন না।
সেলিম ওসমানের এমন পদত্যাগ পত্র ও হাতেমকে সভাপতি করার নির্দেশ একই সাথে অনুরোধের পর তড়িগড়ি করে কথিত পরিচালনা পর্ষদের নির্দেশে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় মোহাম্মদ হাতেমকে। এমন বিতর্কিত কর্মকান্ডের পর গার্মেন্টস সেক্টরের ঝুট বাণিজ্য নিয়ে বিতর্কের ঝড় বইছে সর্বত্র ।
এমন বিতর্কিত ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর আজ (২২ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে সেলিম ওসমানের সেই পুরাতন চাটুকার দালাল চক্র মোহাম্মদ হাতেমের পক্ষ নিয়ে স্বারকলিপি প্রদান করে।
এমন ঘটনায় একত্রিত হয়ে কয়েকজন নীট ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার অুনরোধে আলোচনা সমালোচনাকালে বলেন, “সেলিম ওসমানের ওই চিঠি কি প্রমাণ করে ? মোহাম্মদ হাতেম ফ্যাসিস্ট সরকারের দোষর ছিলেন না ? আন্দোলন চলাকালীন সময় শেখ হাসিনার সামনে দাঁড়িয়ে যে চাটুকারী বক্তব্য দিয়েছেন হাতেম, তাতে কি করে প্রমাণ করবেন ‘হাতেম’ ফ্যাসিস্ট সরকারের দোষর ছিলেন না ? সেলিম ওসমানের সকল কুকর্মের রাজসাক্ষী মোহাম্মদ হাতেম কি একবারও সেলিম ওসমানের অপকর্মের একটিও তথ্য প্রকাশ করেছেন ? তারা দুই জনই বিতর্কিত। অর্থাৎ সেলিম ওসমান ও হাতেম একে অপরের পরিপূরক ! তবে কি সেলিম ওসমান বিনা ভোটে কিংবা কথিত ভোটে বিকেএমইএ দীর্ঘ ১৪ বছর দখলে রেখে কোন অপকর্ম করেন নাই বলে মেনে নিতে হবে তাদের হাতে জিম্মি থাকা ব্যবসায়ীদের ! সেলিম, ওসমান ও হাতেম কি তাহলে ‘দুধে ধোয়া তুলসি পাতা’ !
দীর্ঘ দুই ঘন্টার এমন আলোচনা সমালোচনার রেকর্ড সংরক্ষণও রয়েছে ।