বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:২১ অপরাহ্ন
অগ্নিশিখা প্রতিবেদকঃ ছিনতাই প্রতিরোধে রাজধানীবাসীকে নিজের মোবাইল ও ব্যাগ নিজ দায়িত্বে নিরাপদ রাখার মাধ্যমে পুলিশকে ‘সহায়তা’ করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
ছিনতাই প্রতিরোধে গত এক সপ্তাহে ব্যাপক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আপনাদেরকে এ ব্যাপারে সাহায্য করবো। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত ব্যাগ এবং মানিব্যাগ, পার্স, মোবাইল নিজে একটু নিরাপদে রাখার চেষ্টা করবেন। তাহলে এ কাজটির মাধ্যমে আপনি আমাদের সহযোগিতা করতে পারবেন।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি ঢাকায় ছিনতাই প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে নিজের মোবাইল ও ব্যাগ নিজ দায়িত্বে নিরাপদে
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ইদানিং যে অপরাধটি মানুষের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে সেটি ছিনতাই। ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ মাদকাশক্ত অল্প বয়সের ছেলেরা। ১৫ থেকে ২২ বছরের ছেলেরা মাদকে আশক্ত হয়ে এই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
ছিনতাইয়ে ৮০ ভাগই মোবাইল ছিনতাই জানিয়ে তিনি বলেন, বাসে বা প্রাইভেটকারে যখন কথা বলে তখন মোবাইল নিয়ে দৌড় দেয়। তাদেরকে হাতেনাতে ধরা অত্যন্ত কঠিন কাজ। আমার অফিসারদের কাছে বড় অস্ত্র থাকে, বুট পরা, ইউনিফর্ম পরা থাকে। ছিনতাইকারী থাকে খালি পায়ে বা একটা কেডস পরা। তার সঙ্গে দৌড়ে পারাটা অনেক কঠিন।
তিনি বলেন, তাই প্রথমত আমি ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করবো, আপনার মোবাইল, মহিলারা যারা পার্স ব্যবহার করেন আপনার পার্স বা হ্যান্ড ব্যাগ নিজের নিরাপত্তায় ভালোভাবে রাখার চেষ্টা করেন।
তিনি আরও বলেন, ছিনতাইয়ের ব্যাপারে গত এক সপ্তাহে ব্যাপক ব্যবস্থা নিয়েছি। দিনে এবং রাতে পেট্রোল সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ডিবিকেও এ কাজে লিপ্ত করেছি। গত এক সপ্তাহে তথ্য মোতাবেক আগের তুলনায় ছিনতাই কমে এসেছে। আশা করছি আমরা ছিনতাইকে আরও নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবো।
ছিনতাই প্রতিরোধে গত ২২ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীজুড়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা শুরু করে ডিএমপি।
মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ঢাকায় দুই থেকে আড়াই কোটি লোকের বসবাসের কথা তুলে ধরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এখানে হতদরিদ্র, নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যাই বেশি। বেকারত্বের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নানাবিধ সামাজিক সমস্যা প্রকারন্তরে পুলিশের ঘাড়েই এসে পড়ে। ইদানিং বিভিন্ন গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকেরা ছোটখাট দাবি আদায়ের জন্য রাজপথকেই বেছে নেয়।
তিনি বলেন, সবাই মনে করে রাজপথ দখলে নিলে তাদের দাবি-দাওয়া দ্রুত আদায় হবে বা সমস্যার সমাধান হবে। যার ফলে ঢাকার ভঙ্গুর ট্রাফিক আরও নাজুক অবস্থায় চলে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষকে রাস্তায় থাকতে হয়।
ঢাকার উত্তর থেকে দক্ষিণে মূলত মিরপুর রোড, এয়ারপোর্ট রোড ও রামপুরা রোড এই তিনটি সড়কের কথা তুলে ধরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, একটি রোড বন্ধ হলে পুরো শহর অচল হয়ে যায়। আমরা এ সমস্যার প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হচ্ছি। তাই অনুরোধ দাবির ব্যাপারে খোলা মাঠ, অডিটোরিয়াম, সভাস্থল বেছে নিন। যথাযথ কর্তৃপক্ষকে সেখানে ডেকে টেবিলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। ঢাকাবাসীর ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরও ভঙ্গুর করে তুলবেন না এটি আমার সবিনয় নিবেদন।