বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:০৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ :
ওসমানীনগরের মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধে হাইওয়ে থানা পুলিশের মতবিনিময় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রিপোর্ট নিয়ে যা বললেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা মূল্যস্ফীতি কমাতে আরও দুই-তিন মাস লাগবে: অর্থ উপদেষ্টা আবু সাঈদকে নিয়ে কটূক্তি: মানহানির মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট তাপসীর বিচার শুরু সাবেক এমপি স্মৃতিসহ ৫৬ জন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা বিপিএলের ফিক্সিং তদন্তে তিন সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন বিসিবির এ বছর পশ্চিম তীরে ১০ শিশুসহ ৭০ ​​জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে গণঅধিকার পরিষদ আজ বিশ্ব ক্যানসার দিবস সোনারগাঁয়ে ২০ মামলায় অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার

সরাইলে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তার দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে

কামাল পাঠান, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) চেয়ারম্যান রুবেল ঠাকুর ও কর্মকর্তা মাসুদ রানার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।এ নিয়ে সরাইলের জনমনে চঞ্চল্যতা সৃষ্টি হয়েছে ।

দীর্ঘ নয় বছর ধরে বিভিন্ন কায়দা কৌশল অবলম্ব করে একই পদ ও একই জায়গায় দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন বিষয়ে চল-চাতুরী করে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা, প্রতিষ্ঠান, এবং বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে তাহাদের দুজনের ইচ্ছে মত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দূর্নীতি করার তথ্য চিত্র ফুটে উঠেছে।

সূত্রে জানা যায়, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ দুপুর ১২টা ১৮ মিনিট সরাইল পল্লী উন্নয়ন বোর্ডে পদাবীক কর্মরত ৯জন, জোরা বাড়ি মূল প্রকল্পের পাঁচজন। সরকারি কর্মকর্তা ২জন বিআরডিবি পল্লী উন্নয়ন চেয়ারম্যান রুবেল ঠাকুর। প্রায় ৩০৮ শতক জায়গা সরাইল পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন প্রকল্পের আছে। এর মধ্যে ২৫৩ শতক পুকুর, কেন্টিন, বাজার, অফিস ও ভিটি দোকান ৩৫টা, আবাসিক ভবন ২টা, তথ্য অফিস ও জোড়া কোয়ার্টার। প্রাঃত বাজারের ভিটি, অফিস, বাজার দোকান মার্কেট ৫৫ শতক এর মধ্যে ৩৫টি দোকান, রাস্তা, খালি জায়গা বিদ্যমান বটে।

এখানে যে টুকু খালি জায়গা আছে সেই খালি জায়গার ১৮ শতকের উপরে সরাইল পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মাসুদ রানা ও চেয়ারম্যান রুবেল ঠাকুর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে বিশাল অংকের টাকা মুনাফা করার জন্য দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ৩২/২১ মামলা সরাইল উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেড কর্মকর্তা মাসুদ রানা ও চেয়ারম্যান রুবেল ঠাকুর বাদী হয়ে বনাম ওসমান খাঁ ও মোহাম্মদ আলী বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

এই মামলায় সরাইল থানা (বিআরডিবি) কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেড চেয়ারম্যান, সাবেক দাগ ৬১০৪ জে এল নং ৪৯ খতিয়ান নং ৭০৫৬ এই দাগে ১৮ শতক জায়গার মামলা চলাকালীন অবস্থায় সঠিক ভাবে মামলাতে লড়াই না করে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে বিশাল অংকের টাকা সুবিধা পেয়ে নামকাওয়াস্তে মামলা পরিচালনা করে চেয়ারম্যান রুবেল ঠাকুর ও কর্মকর্তা মাসুদ রানা। প্রতিমান হয় যে যোগসাজশে মামলা পরিচালনা করার কারণে ৯/৬/২৪, ২৬/৬/২৪, ৭/৭/২৪, ১১/৭/২৪, ২৪/৭/২৪ইং ঘন ঘন মামলা তারিখ দিয়ে তারাতাড়ি মামলা নিষ্পত্তি করেন।

উক্ত মামলার বিবাদী পক্ষ ওসমান খাঁ ও মোহাম্মদ আলী রায় পেয়ে যায়। ইহাতে সরকার পক্ষ সরাইল থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেড সরকারি ভিটি/বাজার /দোকান /অফিস বিধিমোতাবেক ১৮ শতক জায়গার মূল্য প্রায় ভিটি প্রতি শতকে ৪ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা।

সরকারি তালিকা ভিটি প্রতি শতক বাজার ৪০ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা। সরকারি তালিকা প্রতি শতক দোকান ৬৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬শত ৪২ টাকা। এই জায়গা শ্রেণি অফিস /ভিটি/ বাজার /দোকান / বাস্তবে চলমান আছে। কিন্তু উক্ত জায়গা বর্তমান বাজার ধর প্রতি শতক প্রায় ১ কোটি টাকার উপরে। অনুমেয় হয় যে সরকারের প্রায় ১৮ কোটি টাকা ক্ষতিগস্ত হয়। চেয়ারম্যান রুবেল ঠাকুর ও কর্মকর্তা মাসুদ রানা স্বজণপ্রীতি কারণে সরকারের ১৮ কোটি টাকা ও তৎসহ রাজস্ব ক্ষতিগস্ত হয়।

উল্লেখিত দাগের ৫৫ শতক সরাইল উপজেলার কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেড পক্ষে চেয়ারম্যান নামে জায়গার শ্রেণি অফিস- বিএস খতিয়ান রেকড ভুক্ত আছে। সরাইল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সূত্রে জানা যায়, অদ্যবধী উক্ত জায়গার শ্রেণির অফিস হিসেবে কোনো খাজনা পরিশোধ করে নাই। প্রকৃত পক্ষে উক্ত জায়গার ভিটি/ দোকান / বাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বটে। এতে করে ক্ষতিগস্ত হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।

৫৫ শতক জায়গায় বাস্তবে ভিটি, দোকান, বাজার, অফিস সহ ৩৫টি ভিটি দোকান বিদ্যমান আছে ও বটে। প্রতিটি দোকানের ভাড়া বাবদ ৮শত টাকা থেকে ৪ হাজর টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত আছে। প্রতিটি দোকানের জামানত বাবদ ৪০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত আছে।

প্রকৃত পক্ষে জামানতের টাকা নেওয়ার সময় চেয়ারম্যান রুবেল ঠাকুর ও মাসুদ রানা যোগসাজশে ৪০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত জামানত না নিয়ে প্রতিটি দোকান থেকে নির্ধারিত টাকা চেয়ে প্রতিটি দোকান থেকে ৭০ হাজার টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকা জামানত বেশি নেয়। ৪০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার রশিদ দিলেও উপরি নেয়া ৩০ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা বেশি নেওয়ার টাকা রশিদ দেওয়া হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী ৩৫টি দোকানের মালিকগন মিডিয়া প্রতিনিধি কে জানান, সরাইল উপজেলার বিআরডিবি চেয়ারম্যান রুবেল ঠাকুর ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাসুদ রানা আমাদের কাছ থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতিটি দোকান থেকে ন্যায্য জামানত নেওয়ার পরেও প্রতিটি দোকান প্রতি ৩০ হাজার থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা বেশি দেওয়া হয়। উক্তবেশী নেওয়া টাকা কোনো রকম রশিদ প্রদান করা হয় নাই আমাদেরকে। রশীদ আজকাল দেবে বলে ঘুরেয়ে অদ্যবধী রশীদ দেওয়া হয় নাই।

তাহারা আরও জানান, এই ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আমাদের সকলের জামানতের বেশি নেওয়া টাকা ফেরত চাই ও তাদের এহেন অন্যায় কাজের বিচার দাবী করছি।

আরেক ভুক্তভোগী জাহাদ আলী আমাদেরকে জানান আমি বিআরডিবির ৫শতক জায়গার জন্য টাকা দিয়েছি, দোকানের জন্য নই, উক্ত টাকার কোন ধরনের কাগজপত্র আমাকে দেয়নি কাগজপত্রে কথা বললে রুবেল বলেন অফিসে আছে।

এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) চেয়ারম্যান রুবেল ঠাকুর আমাদের মিডিয়া প্রতিনিধি কে জানান, আমি কোনো দূর্নীতির সাথে জড়িত নই। আমার বিরুদ্ধে অযথা মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে ।

এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাসুদ রানা সাংবাদিক কে জানান,অপসাংবাদিক আমার পিছু লেগেছে। সব কিছু মিথ্যা ঘটনা, আমরা আইন মেনেই করছি। নিউজ করার আগে আমার সাথে দেখা করে চা খেয়ে যাবেন।

সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইন জানান, সরকারের দায়িত্ব অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই, যদি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে তবে চাকরি আইন ২০১৮ বিধি মোতাবেক তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com