সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধিঃ “সেলিম ওসমান ১৫ বছর বিকেএমইএ কে দখল করে রেখেছিলো। আজ আমরা দেখছি বিকেএমইএর শুধু সভাপতি পরিবর্তন হয়েছে। বাকি পুলো কমিটিই রয়ে গেছে। সেখানে সেলিম ওসমানের মেয়ের জামাইও আছে, তার দোষররাও আছে। আজ পেছন থেকে ইন্ধন দেয় একজন, তিনি হলেন মোহাম্মদ আলী। বিকেএমইএ, ইয়ার্ন মার্চেন্ড, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, রাইফেলস ক্লাব এমন কোন নির্বাচন নাই যেই নির্বাচনে সে বাঁধা দেয় নাই। ভোটের বিনিময়ে টাকা এই প্রবর্তক হচ্ছে মোহাম্মদ আলী। যারা মামলা করেন তারা কি তাকে দেখেন না। তার কার্যকালাপ কি আপনাদের নজরে আসে না। সমস্ত সংগঠনগুলোকে এই ব্যাক্তির হাত থেকে প্রভাবমুক্ত করতে হবে।”
এভাবেই কড়া ভাষায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে ‘আমরা কেমন নারায়ণগঞ্জ চাই ?’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে এমন মন্তব্য করেন।
সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে আমার আবেদন, আগের সৈরাচারের দোষর যারা বিভিন্ন হাট-ঘাট খেতো, তাদের সাথে সিন্ডিকেট করে এখনো নাকি এই টাকা বিদেশে যাচ্ছে।
মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, আমি ভালো নারায়ণগঞ্জ চাই, আমি সুন্দর নারায়ণগঞ্জ চাই, আমি স্বপ্ন দেখতে চাই আবার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নও করতে চাই। আজ আমার চাষাঢ়া থেকে ২নং গেইট যেতে ১ ঘন্টা সময় লাগে। এটা নিরসন করতে হবে। এটা কে করবে ? ট্রাফিক বিভাগ করবে। আগে দায়িত্বে ছিলো ইন্সপেক্টর, এখন হয়েছে এডিশনাল এসপি। বড় বেতনে বড় চাকুরিজীবী এসেছে, কিন্তু সমস্যা সমাধান হয় নাই । এখন আপনারা দেখতে পারবেন যে, সব জুনিয়র ছেলে গুলো ট্রাফিক হয়েছে। তারা বসে থাকে আর কমিউনিটি পুলিশের লোক দিয়ে সব কাজ করাচ্ছে। মনে হয় কি যে, আগস্ট বিপ্লবে সৈরাচার পতনের যে অন্যায় করেছি , সেই কারণে ট্রাফিক বিভাগ আমাদের উপর প্রতিশোধ তুলছে যানজট করে।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুজ্জামনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈনুউদ্দিন আহমদ, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর উদ্দিন আহম্মেদ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগর এর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রুমন রেজা, প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, ন্যাপ নারায়ণগঞ্জের আহ্বায়ক এডভোকেট আওলাদ হোসেন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল ওয়াকার্স ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাঈল, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ফারহানা মানিক মুনাসহ অন্যান্যদের উপস্থিতিতে মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, “চিটাগাং এর পর আমরা সবচেয়ে বেশি ট্যাক্স দেই। আর আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সবচেয়ে বঞ্চিত। সরকারের কাছে আমার দাবি, যেভাবে আমাদের কাছ থেকে রাজস্ব নিচ্ছেন ঠিক সম পরিমান আমাদের উন্নয়ন দিতে হবে। এটা যদি তা না দেয়, তাহলে আমাদের সরকারকে বাধ্য করতে হবে।”
এমন বৈঠক চলাকালে কঠোর ভাষায় মন্তব্যের পর উপস্থি অনেকেই আরো বলেন, এই মোহাম্মদ আলী নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিলেও নেপথ্যে তার ভিতরে নোঙামী। নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা এই মোহাম্মদ আলী যিনি বিএনপির ১৫ ফেব্রুয়ারীর বিতর্কিত নির্বাচনে এমপি হলেও আওয়ামীলীগের পুরো ১৫ বছর ধরে বিএনপির পাশে দেখা না গেরেও তিনি ছিলেন ওসমান পরিবারের অন্যতম দালাল। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে কিং মেকার হিসেবে আখ্যায়িত করলেও প্রবীনদের অনেকেই এই মোহাম্মদ আলীকে ‘নয় লাইখ্যা আলী বলেই ডাকেন। আর এই “নয় লাইখ্যা” ইতিহাস সকলেই জানেন। এই মুক্তিযোদ্ধা এতো দিন জামায়াত ইসরামীর বিরুদ্ধে কথা বরলেও এখন এই নয় লাইখ্যা মোহাম্মদ আলী জামায়াতের নেতাদের হাত ধরে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে ।