বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৭ অপরাহ্ন
অগ্নিশিখা ডেস্কঃ আগামী জুন-জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সুদের হার বাজার পর্যালোচনার ভিত্তিতে আরো হ্রাস করা সম্ভব হবে। সার্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। শিগগিরই বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব প্রতিফলিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা সাক্ষাৎ করতে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আসন্ন রমজান মাসে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে আমদানিতে কোনো ধরনের মার্জিন ছাড়াই এলসি খুলতে ব্যাংকগুলোকে ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এই মুহূর্তে বাজারে ডলারের তেমন কোনো সংকট নেই এবং ডলারের মূল্য বেশ স্থিতিশীল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের মূল্য নির্ধারণ করবে না। এটা নির্ধারিত হবে ডলারের আমদানি ও চাহিদার ভিত্তিতে।
আগামী জুন-জুলাইতে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসার আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সুদের হার বাজার পর্যালোচনার ভিত্তিতে আরো হ্রাস করা সম্ভব হবে। ব্যাংক ঋণের শেণীকরণের সময়সীমা বর্তমানে তিন মাস হতে বাড়ানো যায় কি না, তা বিবেচনা করা হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর। তা ছাড়া দেশের বাইরে ব্যাবসায়িক অফিস খোলার বিদ্যমান শর্তাবলি আরো শিথিল করার বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে স্থানীয় বাজারে ডলারের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। রেমিট্যান্সপ্রবাহ বেশ ইতিবাচক। রপ্তানি আয় ঊর্ধ্বমুখী এবং রিজার্ভ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এর সুফল শিগগিরই আমরা ভোগ করতে পারব। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের সব ক্ষেত্রে কমপ্লায়েন্স অনুসরণের জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের অর্থনীতি বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। ভ্যাট ও ট্যাক্স হার বাড়নোর সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত এ অবস্থাকে আরো চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।
তিনি বলেন, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদ হার আমাদের ব্যাবসায়িক কার্যক্রমে ব্যয় ক্রমাগত বাড়িয়ে দিচ্ছে।’ বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সুদ হার সহনীয় পর্যায়ে রাখার ওপর জোরারোপ করে তিনি বলেন, এর ফলে সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি কিছুটা হলেও হ্রাস পেতে পারে। সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের সুবিধা পেতে প্রায় ৩১টি ডকুমেন্ট দিতে হয়। এ কারণে তারা অনেক সময় ঋণ সুবিধা প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হয়। বিষয়টি সহজীকরণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি জোর দাবি জানান। দেশের অর্থনীতির বিদ্যমান চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যাংক ঋণের শ্রেণিকরণের সময়সীমা ৩ মাস থেকে কমপক্ষে আরো ৩-৬ মাস বাড়ানোর দাবি জানান ঢাকা চেম্বার সভাপতি।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের বাইরে ব্যাবসায়িক অফিস স্থাপনের বিদ্যমান কঠোর নীতিমালা কিছুটা হলেও শিথিল করা প্রয়োজন। যার মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি ও বিনিয়োগ বাড়বে। সেই সাথে বেগবান হবে অর্থনীতি। তাছাড়া দেশের সামগ্রিক আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়বদ্ধতা বাড়ানো উচিত।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহসভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।