বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন
অগ্নিশিখা প্রতিবেদকঃ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের আরো দৃশ্যমান ভূমিকা রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। প্রতিবন্ধিতা এখনো সমাজে নেতিবাচকভাবে দেখা হয়, গণমাধ্যম এ ধারণা বদলে দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা, তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়াসহ তাদের সামর্থ্যরে দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরার ওপরও জোর দেন তারা।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাজধানীতে এক পরামর্শসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কোর সহায়তায় গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিষয়ক উন্নয়ন সংগঠন ‘সমষ্টি’ এ সভার আয়োজন করে। এতে গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধী সমতা বিষয়ে ব্যবহারিক নির্দেশিকার চূড়ান্ত খসড়ার ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও অফিস প্রধান সুজান ভাইজ বলেন, ‘বাংলাদেশে আনুমানিক এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ কোনো না কোনো ধরনের প্রতিবন্ধিতায় ভুগছেন। গত বছর জুলাই বিপ্লবে বেশ বড় সংখ্যক তরুণ ও ছাত্র বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধিতাকে তাদের জীবনে বরণ করে নিতে বাধ্য হয়েছেন। তারা আমাদের জনসংখ্যার গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যাদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও অন্তর্ভুক্তির দরকার। গণমাধ্যমই পারে এই জনগোষ্ঠীর বিষয়ে সঠিকভাবে উপস্থাপন করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের প্রবেশগম্যতাকে আরও সহজ করতে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধিতাকে আবেগ বা সীমাবদ্ধতার দৃষ্টিকোণ থেকে নয় বরং তাদের সাফল্য ও অবদানের দিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত। স্টিফেন হকিং এবং ফ্র্যাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টের মতো ব্যক্তিত্বরা এ ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা হতে পারেন।
ইউনেস্কো প্রণীত গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমতাবিষয়ক ব্যবহারিক নির্দেশিকার চূড়ান্ত খসড়ার প্রধান বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী। তিনি সম্পাদকীয় বিষয়বস্তু ও সমতাভিত্তিক অনুষ্ঠান, গণমাধ্যমের বিষয়বস্তু ও অনুষ্ঠান প্রবেশগম্য করা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থাপনার চর্চাসহ নির্দেশিকার অধ্যায়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। এর আগে অনুষ্ঠিত একটি পরামর্শসভায় ব্যবহারিক নির্দেশিকার খসড়াগুলো চূড়ান্ত করা হয়।
আজকের সভায় প্রাপ্ত পরামর্শের ভিত্তিতে নির্দেশিকাটির আরও পরিমার্জন করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মফিজুর রহমান বলেন, ‘গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বাইরে ব্যবহারিক নির্দেশিকাটি সাংবাদিকতা শিক্ষার্থীদের সচেতন করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, যাতে তারা শিক্ষাজীবন থেকেই এ বিষয়ে ধারণা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘সংবাদের চেয়ে গণমাধ্যম অনুষ্ঠানগুলো প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে আরও বেশি সামাজিক সচেতনতা তৈরি করতে পারে। তাই প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে গুণগত মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান প্রচার প্রয়োজন।
উইম্যান উইথ ডিজঅ্যাবিলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের উজ্জ্বল মাহমুদ বলেন, ‘গণমাধ্যমে ইন্টারভিউ বা আলোচনায় বা ছবি প্রদর্শনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনুমতি গ্রহণ বা তাদের গোপনীয়তাকে সম্মান জানানো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
সমষ্টির নির্বাহী পরিচালক মীর মাসরুরুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইনফরমেশন সেক্টর লিড নূরে জান্নাত প্রমাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধরা বক্তব্য দেন।