বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
শাহজাহান আলী,কুড়িগ্রামঃ কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেনী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ২৩-২৪ অর্থ বছরের বাস্তবায়িত টি,আর,কাবিখা,কাবিখা প্রকল্প অনুসন্ধানে গেলে ওয়ার্ড মেম্বার নুরুল হক, তার ছোট ছেলে লেলিন কে অনুসন্ধান বন্ধ করতে সাংবাদিককে হুমকি প্রদান করেন।লেলিন ধামশ্রেনী ইউনিয়ন বিএনপির নেতা হিসেবে সাংবাদিককে হুমকি প্রদান করে এবং বলে আমি মেম্বারের ছেলে হিসাবে না, ধামশ্রেনী ইউনিয়ন বিএনপির একজন নেতা হিসেবে নিষেধ করছি, অনুসন্ধান বন্ধ করেন, না করলে মামলা হামলা সহ অনেক কিছু হতে পারে ।
২৩-২৪ অর্থ বছরে ধামশ্রেনীর ৯ নং ওয়ার্ডে বাস্তবায়িত রশিদের বাড়ি থেকে আয়নালের বাড়ি, কুলসুমের বাড়ি থেকে জহুরুলের বাড়ি, মন্টুর চাতাল থেকে হবির বাড়ি, প্রকল্প গুলো অনুসন্ধান কালে এ-ই ন্যাক্যার জনক ঘটনা ঘটে।
এ-ই প্রকল্প গুলো এমনভাবে নামকরণ হয়েছে, যাতে কেউ সহজে প্রকল্প এলাকা সনাক্ত করতে না পারে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য বিজয়রাম তবকপুর রশিদের বাড়ি থেকে পশ্চিমে আয়নালের বাড়ি, কুলসুমের বাড়ি থেকে জহুরুলের বাড়ি, শামীম এর বাড়ি থেকে নুরুল পুলিশের বাড়ি। অনেক খোজাখুজির পরে এ প্রকল্প এলাকা গুলো সনাক্ত করা হয়। পর্যবেক্ষণ করে এবং স্থানীয় সূত্রের সাথে কথা বলে জানা যায়, রশিদের বাড়ি থেকে আয়নালের বাড়ি, কুলসুমের বাড়ি থেকে জহুরুলের বাড়ি, মন্টুর চাতাল থেকে হবির বাড়ি এ প্রকল্পগুোলোর বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ঐ ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল হক।
এ প্রকল্প গুলো অনুসন্ধানে জানা যায় মাটি কাটা প্রকল্পের আওতায় এ প্রকল্প গুলোর মাটি কাটা হয়েছে, যা পিআইও কার্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চত করেছে, তবে টি,আরকাবিখা,কাবিটার বরাদ্দ কি হয়েছে? ঐ ওয়ার্ড মেম্বার নুরুল হকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি অনুসন্ধানী সাংবাদিকের উপর ক্ষিপ্ত হন এবং কৌশলে তার ছোট ছেলে লেলিন কে দিয়ে অনুসন্ধান বন্ধ করতে সাংবাদিককে হুমকি দেন।
নুরুল মেম্বার কর্তৃক হুমকির অনুসন্ধান করতে গেলে বিভিন্ন স্থানীয় সূত্র জানায় কাউকে হুমকি দেয়া, ক্ষমতার দাপটে কাউকে টর্চার করা এটা তার জন্য নতুন কিছু নয়। আপনারা এ-র অনেক প্রমান পাবেন,খোঁজ নিলে। কোন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় অভিযোগ করা, মানুষকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা, সাধারণ মানুষকে রাজনৈতিক ক্যাডার দ্বারা প্রহার, এগুলো তার স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। উনি চাকুরী কালীন সময়েও তার উর্ধোতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় অভিযোগ করতেন, চাকুরী কালীন সময়ে দীর্ঘদিন বরখাস্তও ছিলেন। মেম্বার কর্তৃক বর্বরতার শিকার হওয়া খেয়াঘাটের নওশেদ এ-র সাথে কথা হয় সাংবাদিকদের। নওশেদ সাংবাদিকদের বলেন, মেম্বার আমার সম্পর্কে মামা হয়। তার সাথে আমার কোন শত্রুতা নাই। প্রায় ৩িন বছর আগের কথা। সেদিন ১০ টাকা কেজি চাল নিয়ে খেয়াঘাটের লোকজন মেম্বারকে লোকজন ঘিরে কথা বলছিল, ঐ সময় আমি শুধু বলেছি, মামুক জব্দ করেন কেন? মামু হামার কাচের পুতুল, মনে গললে দিবে এলা। এটাই আমার দোষ। এজন্য মেম্বারের বড়ছেলে লালন তার সংগীয় ক্যাডারগ্রুপ নিয়ে চিলমারীর জোর গাছ হাটে আমার উপর হামলা চালায়, ঐ হামলায় আমার ডান পায়ের হাটুর নিচে হাড় ভেঙ্গে যায়। আমার পায়ে এখনো রড লাগানো। কাজ করতে পারি না। ঐসময় চিলমারীর উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আমার পক্ষ থেকে মামলা করেছিলেন। কিন্তু কেউ সাক্ষী দিতে চায়না, মামলার খরচ, তার উপর আবার আমি একা, ইত্যাদি নানান কারনে মামলা প্রতাহার করে নিছি। তবে মেম্বার আমাকে বিনা খরচে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছে। তার বর্বরতায় সমাজের একজন সুস্থ মানুষ প্রতিবন্ধী হয়েছে, এ-র চেয়ে স্পর্শকাতর ঘটনা আর জি হতে পারে? তার বিচার হয় না!!!
এলাকার স্থানীয় সূত্র আরো জানায়, যখন আওয়ামী সরকার ছিল, তখন বড় ছেলে লালন করে দিয়ে, আর এখন আওয়ামী নেই, তাই ছোট ছেলে লেলিন করে দিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এটা তার জন্য নতুন কিছু নয়। বিষয়টি ধামশ্রেনী ইউনিয়ন বিএনপি ও উপজেলা বিএনপির নেতৃস্থানীয়দের অবগত করা হলে, তারা বলেন এধরনের কোন কর্মকাণ্ড আমরা মেনে নিব না।
ধামশ্রেনীর বিএনপির সূত্র জানায়, ১১ই ফেব্রুয়ারী ২০২৩ বিএনপির জাতীয় প্রোগ্রামে ধামশ্রেনী কার্যালয়ে ধ্বংস তান্ডব চালিয়েছিলো, নুরুল মেম্বার এ-র ছেলে লেলিন এ-র বড় ভাই লালন। আমরা লেলিনের বিষয়ে ব্যাবস্থা নিব। আপনারা সাংবাদিক অসংকোচে সত্য লিখে যান, সত্য প্রকাশে বিএনপির কেউ বাধা দেবে না। নুরুল মেম্বার এ-র নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তার কাছে সাধারণ মানুষ বিশেষ কোন প্রয়োজনে গেলে মুখের উপর বলে তুই আসচিস কে? তুই তো মোক ভোট দিস নাই। যাক ভোট দিচিস তার কাছে যা। পুরো ইউনিয়নে মধ্যে নুরুল মেম্বার একমাত্র সৎ। এ-ই জন্য টিসিবি কার্ড জমা নেয়ার পরে কিছু কার্ড হারায় ফেলছে, তথ্যসূত্র বলছে, হারিয়ে যাওয়া কর্ডগুলো নাম কেটে পরিবর্তন করে অন্য জনকে দেয়া হয়েছে, নেয়া হয়েছে কার্ড প্রতি ১০০০ টাকা। সৎ মানুষ তো, তাই সবাই ওয়ার্ডের টিসিবির পন্য দেয়া হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ, কিন্তু ৯ নং ওয়ার্ডে দেয়া হয়, নুরুল মেম্বার এ-র বাড়িতে, পন্য প্রদানের ৩/৪ দিন আগে টাকা জমা দিয়ে পন্য সংগ্রহ করতে হয়ে। নাহলে আর পাওয়া যাবে না, কারণ সৎ মানুষ তো!!
এবার নিয়ে নুরুল মেম্বার টানা দূবার পর পর মেম্বার হন। দ্বিতীয় নির্বাচন ২০২১ এ-র ২৬ শে ডিসেম্বর। ঐ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ধামশ্রেনী ৯ নং ভোট কেন্দ্রে কিছু অসংগতি পরিলক্ষিত হয়, সেদিন বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ১ টাকা পর্যন্ত ব্যালট নেই অজুহাতে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে, পরবর্তীতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এলে ১টার পর আবার ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এরই মাঝে তথ্য আসে নুরুল মেম্বার এ-র বাড়িতে রাতেই প্রিজাইডিং কর্মকর্তার আতায়ত হয়েছে। দুই ঘন্টা ভোট বন্ধ করে জাল ভোট দিতে সাহায্য করেছে কর্মকর্তা। এ-ই সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় এলাকাবাসী ভোটকেন্দ্র ঘিরে রাখে, প্রিজাইডিং কর্মকর্তার গাড়ি জব্দ করে রাখে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাদেরকে নিরাপদে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোট গ্রহনের পরের দিন ভোট কেন্দ্রের টয়লেট হতে সীল মারা ব্যালট, ব্যালট বই পাওয়া যায়। এটা উপজেলা চত্বরে মানববন্ধন করে অন্যান্য প্রার্থীরা, পুনঃ নির্বাচনের জন্য আবেদন করা হয়। তবে দায়িত্বে থাকা ঐ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং টয়লেটে পাওয়া ব্যালটকে নমুনা ব্যালট হিসাবে আখ্যা দেন। উপজেলার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ এ-র পর থেকে ঐ কর্মকর্তাকে কোন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয় না।