বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ১০:২১ পূর্বাহ্ন

আলাউদ্দিন হাজি ট্রাক ড্রাইভার থেকে হয়ে ওঠেন ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলের অঘোষিত ডন

বিশেষ প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জঃ ট্রাক ড্রাইভার থেকে ফতুল্লার আলোচিত গডফাদার হয়ে ওঠেন আলাউদ্দিন হাজী। নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরী করে প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজী থেকে শুরু করে মানুষ খুন, নিরিহ মানুষের জমি দখল ছিল যার নেশা,পেশা। এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেই শুণ্য থেকে কোটিপতি বনে যায় তিনি আলাউদ্দিন। আর হজ্ব পালন করে তিনি বনে যান আলাউদ্দিন হাজি । সেই হাজিপুত্র এখন বাবার পাথ ধরে নানা অপরাধের হোতা ।

সেই আলাউদ্দি;ন হাজি সামান্য ট্রাক ড্রাইভার থেকে হয়ে ওঠেন ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলের অঘোষিত ডন। জীবদ্দশায় তিনি ছিলেন দণ্ডমুণ্ডের কর্তা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আলাউদ্দিন হাজীর এসব অপকর্মে কেউ বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেই হত্যাকান্ডর শিকার হতে হতো। প্রতিপক্ষকে ঘায়েলে সিদ্ধহস্ত আলাউদ্দিন নিজের সন্ত্রাসী বাহিনীকে শক্তিশালী করতে প্রধান সেনাপতি হিসেবে ব্যবহার করতেন আপন ছোট ভাই আউয়াল হাজীকে। একটা সময় দুই ভাইয়ের কাছে জিম্মী হয়ে পরে ফতুল্লার বিশাল একটি অঞ্চলের মানুষ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আলাউদ্দিন হাজী প্রতিপক্ষ কাউকে হত্যা করানোর আগে নিজে দেশের বাইরে চলে যেতেন। দেশের বাইরে থেকে নিজস্ব কিলার বাহিনী দিয়ে হত্যাকান্ড সংগঠিত করেই দেশে ফিরতেন। পিতা আলাউদ্দিন হাজীর দেখোনো এবং শেখানো পথে হাটঁছেন তার সন্ত্রাসী দুই পুত্র যুবলীগ ক্যাডার আক্তার-সুমন। পিতার কাছ থেকে হত্যা, দখলবাজীতে হাতেখড়ি নিয়ে তাঁরাও দুই ভাই ফতুল্লার বিশাল একটি অংশের নিয়ন্ত্রক হয়েছে। এক্ষেত্রে সহযোগীতা নিয়েছেন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা গডফাদার শামীম ওসমানের।

আলাউদ্দিন হাজী জীবদ্দশায় তার পুত্রদ্বয় আক্তার-সুমনকে পলাতক গডফাদার শামীম ওসমানের হাতে তুলে দিয়ে যান। এরপর থেকে আক্তার-সুমনের সন্ত্রাসী পথ আরো সহজতর হয়। সম্প্রতি সময়ে যুবলীগ ক্যাডার আক্তার-সুমন ভোল পাল্টিয়ে অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে বাঁধা হয়ে দাড়ায় ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মামুন হোসাইন।

প্রয়াত পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করে পথেল কাটা মামুনকে কৌশলে কিলার বাহিনী দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আর এভাবেই দশকের পর দশক ধরে গডফাদার আলাউদ্দিন হাজী ও তার পরিবারের সদস্যরা নিজের সাম্রাজ্য ধরে রাখতে ধারাবাহিকভাবে মানুষ খুন করে আসছে। খুনি এই পরিবারের জিম্মীদশা থেকে সাধারণ মানুষ মুক্তি চায়।

স্থানীয়রা জানায়, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ফতুল্লার আলোচিত গডফাদার আলাউদ্দিন হাজীর অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ গড়ে তুলেন মুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন মেম্বার। তাঁকে পথের কাটা মনে করে কিলার বাহিনী দিয়ে খুন করায় আলাউদ্দিন হাজী। খুনের পরিকল্পনা এবং দিক নিদের্শনা দিয়ে তিনি সৌদি আরব চলে যান। এভাবেই পরিকল্পিত ভাবে খুন হয় ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সোলায়মান, নিরিহ শ্রমিক কালু। প্রতিটি হত্যাকান্ডে আলাউদ্দিন হাজী ও আউয়াল হাজীর প্রত্যক্ষ,পরোক্ষ ভাবে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

পিতা ও চাচার পথ অনুসরণ করে চলেছেন গডফাদার আলাউদ্দিন হাজীর সন্ত্রাসী দুই পুত্র যুবলীগ ক্যাডার আক্তার-সুমন।

বিদেশে অবস্থান করে ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মামুন হোসাইনকে হত্যার পরিকল্পনা করে নিজেকে বাঁচানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছেন।

মামুন হত্যাকান্ড নিয়ে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, হত্যাকান্ডের সঙ্গে আক্তার-সুমনের সম্পৃতা পাওয়া গেছে। প্রমাণসহ প্রকাশ করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com