বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনকে আর কোনো আর্থিক বা সামরিক সহায়তা প্রদান করবে না বলে জানিয়েছেন স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো। এছাড়াও যদি অন্য কোনো দেশ ইউক্রেনকে সহায়তা করতে চায়, তাহলে স্লোভাকিয়া তাদের সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাবে। রোববার (২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি এ তথ্য জানায়।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি (এএ) তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার এক খোলা চিঠিতে এ কথা জানান স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
ফিকো বলেন, তার সরকার ইউক্রেনকে এমন কোনো সহায়তা দেবে না, যা দেশটিকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সক্ষম করবে। তবে তিনি এ-ও বলেছেন, যদি অন্য কোনো দেশ ইউক্রেনকে সহায়তা করতে চায়, তাহলে স্লোভাকিয়া তাদের সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিকো তার ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা চিঠিতে লিখেন, ‘স্লোভাকিয়া ইউক্রেনকে আর্থিক বা সামরিক কোনোভাবেই সমর্থন করবে না, যাতে তারা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে। অন্যরা যদি তা করে, আমরা তার প্রতি সম্মান জানাব।’
ফিকো ব্যাখ্যা করেন, স্লোভাকিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ সংক্রান্ত ‘শক্তির মাধ্যমে শান্তি’ নীতির প্রতি সংশয় প্রকাশ করছে। তার মতে, ইউক্রেন কখনোই এত শক্তিশালী হবে না যে, দেশটি নিজের সামরিক সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে কোনো শান্তি আলোচনা করতে পারবে। ফিকোর দৃষ্টিতে, ইউক্রেনের সামরিক শক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
স্লোভাকিয়ার এই নেতা বলেন, আগামী ৬ মার্চ অনুষ্ঠেয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মেলনে স্লোভাকিয়া যে প্রস্তাব দেবে, তার মধ্যে অন্যতম হলো অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা, তা চূড়ান্ত শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই হোক বা পরেই হোক।
তিনি লিখেন, ‘ইইউ সম্মেলনের শেষ পর্বের জন্য স্লোভাকিয়া অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে (চূড়ান্ত শান্তি চুক্তি কখন সম্পন্ন হবে, তা বিবেচনা না করেই), যা প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহু সদস্য রাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করেছে।’
এ ছাড়া, ফিকো তাঁর দেশের পক্ষে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উত্থাপন করেছেন, যেখানে তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মেলনের সিদ্ধান্তে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা উচিত যে, ইউক্রেনের মাধ্যমে স্লোভাকিয়া ও পশ্চিম ইউরোপে গ্যাস পরিবহনের পথ পুনরায় চালু করতে হবে। তিনি লিখেন, ‘ইউক্রেনের মাধ্যমে রুশ গ্যাস সরবরাহ পুনরুদ্ধার না করা হলে ইউরোপের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা নিশ্চিত করা অসম্ভব।’
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সম্মেলন ইউক্রেনের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষের মতকেই একমাত্র গ্রহণযোগ্য দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে ধরে নেয় এবং ভিন্নমতের প্রতি কোনো গুরুত্ব না দেয়, তাহলে ইউক্রেন বিষয়ে ইউরোপীয় কাউন্সিল কোনো সম্মিলিত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারবে না।
ফিকোর এই বক্তব্য এমন এক সময় এল, যখন হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের মধ্যে তীব্র বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।