সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪০ অপরাহ্ন

লাঙ্গলবন্দের অষ্টমী স্নানে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল

সাহাব উদ্দীন বিশেষ প্রতিবেদকঃ হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য আমার পাপ হরণ কর’এ মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে প্রতিবছর চৈত্রের মাসের শুক্লাষ্টমী তিথিতে স্নান করতে আসেন দেশ-বিদেশের সনাতন ধর্মালম্বীদের লাখ লাখ পুন্যার্থী। তীর্থস্থান জুড়ে পূণ্যার্থীদের জন্য নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার ও র‌্যাব সদস্য সহ রয়েছে সিসি ক্যামেরার আওতায়। স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। যানজট নিরসনে সড়কে ট্রাফিক ও নদীতে নৌ-পুলিশ।

শুক্রবার রাত ২টা ৮ মিনিটে লগ্ন শুরু হয়ে শেষ হবে শনিবার রাত ১২টা ৫১ মিনিটে। স্নানঘাট গুলোতে পূণ্যার্থীরা ফুল, বেলপাতা,ধান, দূর্বা,হরিতকি, ডাব, আম পাতা ইত্যাদি পিতৃকুলের উদ্দেশ্যে নদের জলে তর্পণ করেন। স্নানকে ঘিরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর সুষ্ঠুভাবে স্নান সস্পাদনের লক্ষ্যে ২০টি স্নান ঘাট, নারীদের জন্য কাপড় পরিবর্তন কক্ষ ও অস্থায়ী টয়লেট, পানীয় জল সরবরাহ করে লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ। এ উৎসবে অংশ নিতে দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে পূণ্যার্থীরা আসেন লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসবে। স্নান উৎসবে এবার বসছে লোকজ মেলা। এবারও কয়েক লাখ পুন্যার্থী স্নানে যোগ দিয়েছে এবং সুষ্ঠুভাবে স্নান সম্পূর্ণ করবেন। পূণ্যার্থীরা জানান, জগতের যাবতীয় সংকীর্নতা ও পঙ্কিলতার আবরণে ঘেরা থেকে জীবন, দেশ জাতির শান্তি মঙ্গল কামনা ও পাপমুক্তির বাসনায় ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করেন তারা। একাধিক পুন্যার্থী নারী ও পূরুষ । পরশুরাম পিতার আদেশে মা এবং আদেশ পালন না করা ভাইদের কুঠার দিয়ে হত্যা করেন। কিন্তু মাতৃহত্যার পাপে পরশুরামের হাতে কুঠার লেগেই থাকে। অনেক চেষ্টা করেও সে কুঠার খসাতে পারেন না তিনি। এক পর্যায়ে পিতার কথামত তীর্থে তীর্থে ঘুরতে থাকে। শেষে ভারতবর্ষের সব তীর্থ ঘুরে ব্রহ্মপুত্র পুণ্যজলে স্নান করে তার হাতের কুঠার খসে যায় এখানে। এতে মনে করেন তার পাপ মোচন হয়েছে। খসে যাওয়া কুঠারকে লাঙ্গলে রূপান্তর করে পাথর কেটে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে মর্ত্যলোকের সমভূমিতে সেই জলধারা নিয়ে আসেন। ক্রমাগত ভূমি শ্রমে পরশুরাম ক্লান্ত হয়ে পড়েন লাঙ্গল চালানো বন্ধ করেন।

লাঙ্গলবন্দ স্নান পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেঃ জেনারেল (অবঃ) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় সুষ্ঠুভাবে স্নান সম্পাদনের জন্য সব রকম প্রস্তুতি করা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় তীর্থস্থান জুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। বাংলাদেশের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অন্য কোথাও নেই।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com