বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২২ অপরাহ্ন
গাইবান্ধা প্রতিনিধি: বাহা বা ফুল উৎসব আসলে সৃষ্টির উৎসব। বসন্তকালে গাছে গাছে পাতা, মুকুল প্রস্ফুটিত হয়; ফুল ফোটে। শাল, পলাশের ফুলে ভরে ওঠে জঙ্গল। এই ঋতুতে যে ফুল ও পাতা গজায় তাকে ব্যবহারের আগে প্রকৃতির সেই নতুন সৃষ্টিকে সম্মান জানাতেই এই বাহা উৎসব পালিত হয়। মঙ্গলবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন নাচে গাচে মেতে ওঠেন বাহা উৎসব উদযাপনে। বাহা পরব উপলক্ষে গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লী সেজে ওঠে বসন্তের রঙিন সাজে। উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের তল্লাপাড়া গ্রামে সেভেন ডে অ্যাডভেন্টিস্ট প্রি সেমিনারি স্কুল প্রাঙ্গণে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড এবং আর্টিকেল নাইনটিন এর সহযোগিতায় ও অবলম্বনের আয়োজনে বাহা পরব বা বসন্ত উৎসব উদযাপন করেন সাঁওতালরা।
দিনভর ধর্মীয় পুজা-অর্চনা ও সাঁওতাল সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাঁওতাল নারী-পুরুষ ও কিশোরীরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা, গাইবান্ধা পরিবেশ আন্দোলনের আহ্বায়ক ওয়াজিউর রহমান রাফেল, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম, গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি অমিতাভ দাশ হিমুন, অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী, আইপি নিউজের চিফ এডিটর এ্যান্থনি রেমা, আদিবাসী-বাঙালী সংহতি পরিষদ সদর উপজেলার আহ্ধসঢ়;বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, অবলম্বনের অ্যাডভোকেসি কো-অর্ডিনেটর টনি চিরান, ব্রিটিশ সরেন, মাহবুব মুকুল, সাবিনা টুডু, সুরভী মার্ডি, অঞ্জলী রানী দেবী, নাজমা বেগম, সেলিনা আকতার সোমা, সাজেদা পারভীন রুনু, মনির হোসেন সুইট প্রমুখ।
এতে সভাপতিত্ব করেন বাহা পরব উদযাপন কমিটির আহবায়ক জেমস সরেন। সাঁওতালরা এ দেশেরই নাগরিক। তাদের কৃষ্টি ও ঐতিহ্য সংস্কৃতিরই অংশ উল্লেখ করে আলোচকরা বলেন, সাঁওতালসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় তাদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষাদান ও কালচারাল একাডেমি স্থাপন করা প্রয়োজন। আলোচকরা আরও বলেন, প্রাণ-প্রকৃতিকে ভালোবেসে সাঁওতাল জনগোষ্ঠী বাহা উৎসব পালন করে। ভবিষ্যতে যাতে এই ঐতিহ্যবাহী বাহা পরব হারিয়ে না যায়, সেজন্য প্রতিবছর এই উৎসবের আয়োজন করা উচিত।