বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৫ পূর্বাহ্ন
সাহাবউদ্দীন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ প্রায় দুই দশক পর মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান। রোববার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
এই নেতার মুক্তিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের সামনে ভিড় জমান লাখো নেতাকর্মী। নেতাকর্মীদের ভিড় সামলাতে আগে থেকেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিল প্রশাসন৷ সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল সাড়ে ১০টায় কারা ফটক দিয়ে বের হন। তার গায়ে ছিল কালো শার্ট, গলায় বিএনপির দলীয় ও ফিলিস্তিনের পতাকা। এসময় উল্লাসে ফেসে পড়েন সমর্থকরা।
জানা যায়, জাকির খানের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৩৩টি মামলা ছিল। সর্বশেষ ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যাকাণ্ডের পর আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন তিনি। ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র্যাব-১১-এর একটি অভিযানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি আলোচিত সাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে খালাস পান তিনি৷ ৩২টি মামলায় খালাসের পাশাপাশি একটি মামলায় জামিন পান।
জাকির খানের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদ বলেন, সকালে জাকির খানকে রিলিজ করা হয়। অনেক বছর আগে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় তিনি পাঁচ বছর সাজা ভোগ করেন। সাজার মেয়াদ শেষ হলে আজ তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
সকালে কারা ফটকে গিয়ে দেখা যায়, জাকির খানের মুক্তির খবরে সকাল থেকে দলে দলে নেতাকর্মী ও তার স্বজনরা জেলা কারাগারের গেটের সামনে জড়ো হয়। এ সময় তারা ব্যান্ড বাজিয়ে ও স্লোগান দিয়ে উল্লাস করে। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় জাকির খান কারাগার থেকে মুক্ত হলে তারা ফুল ও মালা দিয়ে তাকে বরণ করে নেন। এ সময় জাকির খান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও ফিলিস্তিনের পতাকা নেড়ে আনন্দ উল্লাস করেন। পরে গাড়িতে চড়ে তিনি পুরো শহর ঘুরে শোডাউন করেন।
এ বিষয়ে জাকির খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম বলেন, জাকির খানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা ছিল। এরমধ্যে ৩২টি মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। বাকি ১টি মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন।
সন্ত্রাসবিরোধী মামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক আগে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় আজ তিনি সাজা শেষ করে মুক্তি পেয়েছেন।’
কারা মুক্তির পর জাকির খান ছাদ খোলা গাড়িতে পুরো শহর ঘুরে বেড়ন। তার গাড়ির আগে-পিছে ছিল নেতাকর্মীদের ভিড়। শহর পুরো স্তব্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় কোন গাড়ি চলতে পারেনি। তাকে এক নজর দেখার জন্য শহরের প্রতিটি বিপনিবিতানের ছাদ ও সামনে ছিল সাধারণ মানুষের ভিড়। অনেকে বাড়ির ছাদ থেকেও জাকির খানকে দেখতে ভিড় করেন।
কারা মুক্তির পর জাকির খান বলেন, আমি তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে সবাইকে একসাথে নিয়ে কাজ করবো। আর আমাদের মুসলিম উম্মার প্রথম কাজ ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে তার প্রতিবাদ করা। বর্তমান প্রশাসনকে সহযোগিতা করে মানবিক নারায়ণগঞ্জ গড়ে তুলবো। বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার ছিলাম আমরা, আমাদের পরবর্তী জেনারেশন যেনো তেমন প্রতিহিংসার শিকার না হয় সেটাই চেষ্টা করবো।