বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৫ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন একটি অন্যতম প্রধান কার্যক্রম। যুদ্ধ, দাঙ্গা বা সহিংসতায় জর্জরিত অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এই মিশনের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু সম্প্রতি মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অর্থায়ন পুরোপুরি বন্ধের প্রস্তাব ওঠায় বৈশ্বিক সহযোগিতায় এক নতুন সংকটের ইঙ্গিত মিলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস মঙ্গলবার মন্ত্রণালয় দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সক্রিয় আছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন। এসবের মধ্যে ৯টি দেশ ও অঞ্চলে মিশনের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করে জাতিসংঘ। এই দেশ ও অঞ্চলগুলো হলো মালি, লেবানন, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, দক্ষিণ সুদান, পশ্চিম সাহারা, সাইপ্রাস, কসোভো, ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী গোলান হাইটস (যা বর্তমানে ইসরায়েলের দখলে আছে) এবং সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যবর্তী অঞ্চল আবেই।
যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের বৃহত্তম দাতাদেশ। প্রতি বছর মিশনের তহবিলে মোট ৯৩০ কোটি ডলার প্রদান করে যুক্তরাষ্ট্র। এই অর্থের মধ্যে মিশনের মূল বাজেটে অন্তর্ভূক্ত হয় ৩৭০ কোটি ডলার যা বাজেটের ২২ শতাংশ এবং শান্তিরক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন খাতে অন্তর্ভুক্ত হয় ৫৬০ কোটি ডলার, যা ওই বাজেটের ২৭ শতাংশ।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ৯৩০ কোটি ডলারের বাজেট থেকে আপাতত ২১০ কোটি ডলার কমাতে চান ট্রাম্প এবং কেটে রাখা এই অর্থ দিয়ে অ্যামেরিকা ফার্স্ট অপরচুনিটিজ ফান্ড (এওয়ানওএফ) নামের একটি তহবিল গঠনের পরিকল্পনা আছে তার। এই তহবিল থেকে সীমিত আকারে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও অংশীদার দেশগুলোতে আর্থিক সহায়তা পাঠানো হবে।
অবশ্য ট্রাম্প প্রস্তাব করলেই যে শান্তিরক্ষা মিশনের বাজেট কমে যাবে— ব্যাপারটি এমন নয়। কারণ আইন অনুযায়ী এই প্রস্তাবনা মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসে পাঠাতে হবে হোয়াইট হাউসকে এবং কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং উচ্চকক্ষ সিনেট যদি অনুমোদন করে, কেবল তাহলেই কার্যকর হবে এটি।
মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে ট্যামি ব্রুসও এ কথা বলেছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্যামি বলেন, “এটি একটি প্রস্তাবনা। চূড়ান্ত বাজেট বা পরিকল্পনা নয়।”
এ ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফানি ডুজারিকের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তিনি বলেছেন, “এখন পর্যন্ত এটি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তাই এ ইস্যুতে জাতিসংঘের কোনো মন্তব্য নেই।”
সূত্র : রয়টার্স