রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ :
আরও বেশি বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষী নেওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ফতুল্লায় মামলা তদন্তে ঘুষ দাবি, এসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রমে ফিরেছে সুপ্রিম কোর্ট কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন: ওসমানীনগরে ড্রেজার ও নৌকা আটক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে খালার সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার প্রতারণা! ইসরায়েলে সাইবার হামলা করেছে নবাবগঞ্জের ফ্রিল্যান্সার আছিফ সহএকটি সিভিলিয়ান ফোর্স নবাবগঞ্জে সরকারি গাছ কেটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা ছাত্রনেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি ছাত্রদলের আহ্বান ঈদে যথাযথ দায়িত্ব পালন করায় কর্মকর্তাদের প্রধান উপদেষ্টার ধন্যবাদ দাবি আদায়ে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

ছাত্রনেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি ছাত্রদলের আহ্বান

অগ্নিশিখা প্রতিবেদক: রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদে সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।

আজ রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

এর আগে শনিবার বিকেলে নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের হত্যার শিকার হন জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। ছুরিকাঘাত করে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

নিহত পারভেজ ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার বিরুনিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।

লিখিত বক্তব্যে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিব বলেন, দু-তিনজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বসে সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন পারভেজ। এমন সময় মেহেরাজ ইসলাম এবং আরও দুজন ছাত্রীসহ কয়েকজন ওই পথে হেঁটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ করেই তারা পারভেজকে উদ্দেশ্য করে ‘এদিকে তাকাচ্ছ কেন?’, ‘এদিকে তাকালে চোখ তুলে দেব’-এ ধরনের মন্তব্য করতে থাকেন।

পারভেজ জবাবে বলেন, “কি দোষ করেছি ভাই?” এতে তারা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আব্দুস সালাম হস্তক্ষেপ করেন এবং উভয়পক্ষকে মীমাংসা করে দেন।

তিনি বলেন, প্রচণ্ড উচ্ছৃঙ্খল মেহেরাজ ইসলাম গং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করে দেওয়া এই মীমাংসা মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ১০-১৫টি লাশ ফেলার হুমকি দিয়ে বহিরাগতদের ডেকে আনেন এবং পারভেজের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালান। এই হামলায় মেহেরাজ ইসলামের সঙ্গে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক শোভহান নিয়াজ তুষার ও যুগ্ম-সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াজীর নেতৃত্বে এলাকার বেশকিছু উচ্ছৃঙ্খল সন্ত্রাসী জড়িত ছিল। তারা ছুরি দিয়ে পারভেজের বুকে আঘাত করে হত্যা করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের মীমাংসার পর যখন সন্ত্রাসীরা হুমকি ধামকি দিচ্ছিল, তখন শহীদ পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আকুতি জানিয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসন কোনো ধরনের সহায়তা করেনি।

ছাত্রদল সভাপতি বলেন, আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি-পারভেজ ইসলামের ওপর চালানো এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। নতুবা তুচ্ছ একটি ঘটনার জেরে, প্রক্টর কর্তৃক মীমাংসার পরও একজন মেধাবী ছাত্রকে প্রকাশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করার প্রশ্নই আসে না। আমরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কিছু সন্ত্রাসী রক্ষীবাহিনী সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব কায়েম করেছে। তারা বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের কর্মীদের মবের ভয়ভীতি দেখিয়ে ছাত্রলীগের স্টাইলের সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি করছে। ক্যাম্পাস তো বটেই, এমনকি ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণের বাইরে গিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কার্যক্রম পরিচালনায়ও বাধা দেওয়া হচ্ছে, যা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এটা নতুন নামে সেই পুরাতন ফ্যাসিবাদ। এই চলমান দখলদারিত্ব ও সন্ত্রাসই এই হত্যার পেছনে খুনী-সন্ত্রাসীদের সাহস ও মদদ জুগিয়েছে। পারভেজের খুনিদের রাজনৈতিক প্রশ্রয়দাতাসহ খুন ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের যথাযথ বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

রাকিব বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে অশোভনীয় ভাষায় যে পোস্ট দেওয়া হয়েছে, আমরা তার নিন্দা জানাই। তারা অভিযুক্তদের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে অশোভন ভাষায় আক্রমণ ও তদন্তের আগেই অভিযুক্তদের পক্ষ নেওয়াটাই প্রমাণ করে, তারা অপরাধ আড়াল করাতে বিশ্বাসী। আমরা মনে করি এই সংগঠনের প্রতিটি কমিটিতে যেভাবে সাবেক ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের ঠাঁই দেওয়া হয়েছে, তারা যেভাবে সাবেক ছাত্রলীগারদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছেন, এই অশোভন ভাষা সেই প্রক্রিয়া ও চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। আমরা তাদেরকে ষড়যন্ত্রের নীলনকশাহীন সঠিক ও ইতিবাচক ধারার ছাত্ররাজনীতি চর্চার আহ্বান জানাই।

ছাত্রদলের এ নেতা বলেন, গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও সবার প্রতি সমতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে পারছে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তারা বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় আলোচনা করলেও, বিভিন্ন সরকারি নিয়োগগুলো এককভাবে বৈষম্যবিরোধীদের তালিকা ধরে দিলেও তারা ছাত্রদলের মতো বৃহত্তম ও জুলাই আন্দোলনের সর্বাধিক শহীদের ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে বসে আলোচনা করেননি। বিভিন্ন ঘটনায় বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রশাসন থেকে থেকে আমরা যথাযথ সহযোগিতাও পাই না। প্রশাসনে এখনও হাসিনার প্রেতাত্মা লুকিয়ে আছে। আর এদেরকে উৎসাহ ও আশ্রয় দিচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। বিভিন্ন ঘটনায় সেটা বারবার প্রমাণিত হচ্ছে। আমরা এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী, ইন্ধনদাতা, হুকুমদাতা এবং হামলাকারী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

খবরটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024 thedailyagnishikha.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com